জাপানের মিলিয়নিয়ারদের গ্রাম হিসেবে পরিচিত ‘ওশিনো হাক্কাই’। ছবির মতো এ গ্রামে রয়েছে রহস্যে ঘেরা আটটি পুকুর। রয়েছে সাড়ে চার শ বছরের পুরনো অসংখ্য খড়ের ছাদের খামারবাড়িসহ জাপানি কারুশিল্পের নানান নিদর্শন। ধর্মীয় এবং পর্যটন স্পট হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হয় ওশিনো হাক্কাইকে। তাই বছরে লাখ লাখ পর্যটকের আগমন ঘটে এ গ্রাম ঘিরে। জাপানের অন্যতম ধনী গ্রামগুলোর একটি ওশিনো হাক্কাই। আর্থিকভাবে অন্যান্য গ্রামের চেয়ে এগিয়ে থাকায় এটি মিলিয়নিয়ারদের গ্রাম হিসেবেই পরিচিত জাপানিদের কাছে। ফুজি ফাইভ লেক অঞ্চলের একটি ছোট গ্রাম ওশিনো হাক্কাইতে রয়েছে রহস্যে ঘেরা আটটি পুকুর। এ পুকুরগুলোর অবস্থান কাওয়াগুচিকো হ্রদ ও ইয়ামানাকাকো হ্রদের মাঝামাঝি। পুকুরগুলো ফুজিসান নেমোটো হাক্কো সেক্রেড গ্রাউন্ডস বা মোটা হাক্কো নামেই পরিচিত। পুকুরগুলোকে ফুজি উপাসনার একটি অংশ মনে করা হয়। মাউন্ট ফুজিতে যাওয়া পুণ্যার্থীরা পুকুরগুলোয় পবিত্র হয়েই পর্বত আরোহণ করেন। এলাকায় প্রচলন রয়েছে-এ গ্রামে থাকা আট পুকুরে আছে পৃথক আটটি ড্রাগন দেবতা। এ ড্রাগনগুলো বিভিন্ন মনোবাসনা পূরণ করে। তাই ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে পুকুরগুলো বেশ গুরুত্ব বহন করে। সপ্তাহের শনি ও রবিবার পুকুরে হাত-মুখ ধুয়ে পবিত্র হতে আসেন হাজার হাজার পুণ্যার্থী। বোতল ভর্তি করে নিয়ে যাওয়া হয় পুকুরের পবিত্র পানি। প্রতি বছরের ৮ আগস্ট এ গ্রামে হয় তিন দিনব্যাপী ওশিনো হাক্কাই ফেস্টিভ্যাল। যাতে জমায়েত হয় লাখো মানুষ। এ জমায়েতে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক থাকেন চীন থেকে আসা ধর্মীয় পর্যটক। এ আট পুকুর হয়ে উঠেছে ওসিনো হাক্কাই গ্রামের অন্যতম পর্যটন স্পট। পর্যটকরা দর্শনের পাশাপাশি পান করেন পুকুরের স্বচ্ছ ও শীতল পানি। অবলোকন করেন পুকুরের হরেক রকমের মাছ ও জলজ প্রাণী। এ পুকুরগুলো ঘিরে গড়ে উঠেছে শত শত জুস বার, রেস্তোরাঁ ও স্যুভেনির শপ। পর্যটকদের আকৃষ্ট করে রোস্ট করা মিষ্টি আলু, টোস্টেড রাইস ক্র্যাকারসহ স্থানীয় নানা খাবার। রয়েছে কারুশিল্প ও অন্যান্য স্থানীয় পণ্য বিক্রির দোকান। অনিন্দ্যসুন্দর এ পর্যটন স্পটে রয়েছে এয়ার মিউজিয়াম, হ্যানোকি বায়াশি শিরিওকান। রয়েছে সাড়ে চার শ বছরের পুরনো খড়ের ছাদের ঐতিহ্যবাহী অসংখ্য খামারবাড়ি এবং বিভিন্ন কৃষি সরঞ্জাম, গৃহস্থালি সামগ্রী ও সামুরাই অস্ত্র প্রদর্শনী।
এ পর্যটন স্পট ঘুরতে যাওয়া মাহবুবুর রহমান বাবু বলেন, ‘এ গ্রাম দেখতে ছবির মতোই সুন্দর। এখান থেকে মাউন্ট ফুজি দেখতে অসাধারণ লাগে। তাই অপূর্বসুন্দর এ গ্রাম দেখতে এসেছি। গ্রামটি দেখতে প্রতি বছর লাখ লাখ মানুষ ছুটে আসেন।’