রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বিটিভিতে হামলা চালিয়ে তান্ডব চালানোর পাশাপাশি দেশব্যাপী নৈরাজ্যের প্রতিবাদে সংস্কৃতিকর্মীরা প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেছে। গতকাল রামপুরায় বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবনের সামনে অনুষ্ঠিত হয় এই সমাবেশ। বিটিভিতে ধ্বংসযজ্ঞের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি এবং ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের প্রতি সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি হত্যার বিচার দাবিও করেন তারা। এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত বিটিভি প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখেন শিল্পীরা।
এতে উপস্থিত ছিলেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ, অভিনেত্রী শমী কায়সার, সুজাতা, চিত্রনায়ক রিয়াজ, অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস, নিপুণ, আজিজুল হাকিম, রোকেয়া প্রাচী, তানভীন সুইটি, হৃদি হক, জ্যোতিকা জ্যোতি, সাজু খাদেম, সোহানা সাবা, চন্দন রেজা, সংগীতশিল্পী শুভ্র দেব, পরিচালক মুশফিকুর রহমান গুলজার, এস এ হক অলিক, খোরশেদ আলম খসরু প্রমুখ।
সংসদ সদস্য ও চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ বলেন, ছাত্ররা যে কোটার আন্দোলনে নেমেছিল তার পক্ষে আমরা সবাই ছিলাম। কিন্তু আন্দোলনে এই ছাত্রদেরকে ঢাল করে একদল মানুষরূপী পশু জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে ছারখার করে দিয়েছে আমাদের দেশটিকে। দেশটি হয়তো আবার আমরা কষ্ট করে ঠিক করে ফেলব, কিন্তু যে প্রাণগুলো ঝরে গেল সেগুলো আর আমরা কোনোদিন ফিরে পাব না। বিটিভিতে আগুন কেন সেই প্রশ্ন তুলে ফেরদৌস বলেন, আজ আমরা বিটিভিতে এসেছি। আমাদের সংস্কৃতির অস্তিত্বের একটি জায়গা এটি। সে বিটিভিতে আগুন কেন? এ অগ্নিসন্ত্রাসী কারা? তাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে, চিহ্নিত করতে হবে। যতগুলো প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, আপনারা যদি দেখেন, বাচ্চারা যদি দেখে, বুঝতে পারবে সুপরিকল্পিতভাবে এসব করা হয়েছে। তাদের বিচার চাই। আজ আমরা সব অঙ্গনের শিল্পীরা এখানে একত্রিত হয়েছি সংহতি প্রকাশ করার জন্য। সব সহিংসতার বিরুদ্ধে আমরা। অভিনেত্রী শমী কায়সার বলেন, যে মাসে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে স্বাধীনতার ইতিহাসকে হত্যা করা হয়েছে। সেরকম একটি মাসে আমরা এই প্রতিবাদ সমাবেশে দাঁড়াব, এই বাংলাদেশ টেলিভিশন চত্বরে- সেটা আমাদের জীবদ্দশাতে কখনো ভাবিনি। আমরা ব্যথিত, ক্ষুব্ধ, মর্মাহত। কারণ যে বাংলাদেশ টেলিভিশন বাঙালির সংস্কৃতির ধারক ও বাহক, বাংলাদেশের ইতিহাসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করেছে- সেই বাংলাদেশ টেলিভিশনে এসে এই ধ্বংসযজ্ঞ দেখে মর্মাহত হয়েছি। এই ধ্বংসযজ্ঞের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার দাবিও জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশে এরকম নৃশংসতা, এমন ধ্বংসযজ্ঞ, এত প্রাণহানি আমরা আর চাই না।