প্রথমেই আইপিএস এবং ইউপিএসের পার্থক্য সম্পর্কে জানা দরকার। আইপিএস (ইনস্ট্যান্ট পাওয়ার সাপ্লাই) এবং ইউপিএস (আনইন্টারাপ্টেড পাওয়ার সাপ্লাই) তখনই বিদ্যুতের জোগান দেয় যখন বিদ্যুতের প্রধান লাইনে সরবরাহ বন্ধ থাকে। কিন্তু ইউপিএসে সংযোগ বদলের বিষয়টি লোডশেডিংয়ের প্রায় সঙ্গে সঙ্গে করতে পারে, যা কি না এক সেকেন্ডেরও কম সময়। তবে আইপিএসের ক্ষেত্রে এক সেকেন্ড বা এর চেয়ে কিছুটা বেশি সময় লাগে। আজকাল বেশির ভাগ আইপিএসেই ইউপিএস মোড থাকে, তাই দুই ভাবেই কাজ চালানো সম্ভব হয়। বাজারে দুই ধরনের আইপিএস রয়েছে : বৈদ্যুতিক এবং সোলার সিস্টেম। বৈদ্যুতিক আইপিএস বাসস্থানের বিদ্যুতের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে এবং বিদ্যুৎ থাকাকালীন এটি চার্জ গ্রহণ করে। অন্যদিকে সোলার সিস্টেম আইপিএস সূর্যালোক থেকে শক্তির জোগান নেয় এবং এর জন্য কোনো প্রধান বিদ্যুতের সংযোগ থাকতে হয় না। বিদ্যুতের বাড়তি খরচের হিসাবে সোলার আইপিএস সাশ্রয়ী। এ ছাড়া এ তালিকায় আছে মিনি আইপিএস, যা কি না প্রতিটি ডিভাইসের ক্ষমতা ১০০ ওয়াট পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে সক্ষম। একইভাবে দুই ধরনের ইউপিএসও পাওয়া যায়। এক. অনলাইন এবং দুই. অফলাইন। অফলাইন ইউপিএস অনলাইনের তুলনায় বেশি সাশ্রয়ী। অন্যদিকে কম সময়ের সংযোগ বিচ্ছিন্নতার জন্য অফলাইন ইউপিএস বেশি উপযোগী।
তাই আপনি যদি অনলাইন ইউপিএস কেনার কথা ভেবে থাকেন তাহলে মাথায় রাখা দরকার যে, বেশির ভাগ পণ্যের মতোই দাম যত বেশি হবে এই ইউপিএসের মানও তত ভালো হবে।
সক্ষমতা জানা প্রয়োজন : আইপিএস-ইউপিএস কেনার আগে হিসাব করতে হবে ব্যবহৃত ডিভাইসে ঠিক কতটুকু বিদ্যুৎ প্রয়োজন এবং কতগুলো ডিভাইসে বিদ্যুৎ সংযোগ করা হবে। যদি জোগানের চেয়ে চাহিদা বেশি হয় তাহলে প্রয়োজন পূরণ হবে না। তাই হিসাব করার সময় ডিভাইসগুলোর পাওয়ার বা ওয়াটশক্তি পরিমাপ করে নিতে হবে। বেশির ভাগ সময় পণ্যের ওপরেই এগুলো লেখা থাকে। সব সময় নিশ্চিত করতে হবে যে, আইপিএস-ইউপিএসের ২০ শতাংশ যেন সবচেয়ে অনুকূল মাত্রায় ব্যাকআপ পারফরম্যান্সের জন্য প্রস্তুত থাকে।
ফিচারও জেনে নিন : দীর্ঘক্ষণ চলার জন্য কয়েকটি নির্দিষ্ট ফিচার আইপিএস ও ইউপিএসকে সহায়তা করে। যেমন : পাওয়ার সাপ্লাই ডিভাইসে যাতে ওভারচার্জিং, ওভারলোডিং এবং শর্টসার্কিট সুরক্ষা ইত্যাদি। এ ছাড়া খেয়াল রাখতে হবে, আইপিএস ও ইউপিএস যেন সব ডিভাইসের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে, যাতে সুরক্ষা ব্যবস্থা সব সময় বজায় রাখা যায়। ডিভাইসের মধ্যে ঠিক মাত্রার সাইন তরঙ্গ আউটপুট আছে কি না সেটিও দেখতে হবে। এ সাইনওয়েভটি মূলত একটি স্পষ্ট সংকেত দেয় এবং বজ্রপাতের সময় ডিভাইসগুলোকে ঠিকভাবে চলতে সাহায্য করে। আজকাল আইপিএস ও ইউপিএস ডিভাইসগুলোয় ডিজিটাল ডিসপ্লে আছে, যাতে ডিভাইসের স্ট্যাটাস দেখা যায়।
ওয়ারেন্টি দেখে নিন : আইপিএস ও ইউপিএসের সব ধরনের ওয়ারেন্টিই ব্যাটারির জীবনচক্রের ওপর নির্ভর করে। ব্যাটারিগুলো দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে কাজ করা বন্ধ করে দেয়, তাই সেটুকু মাথায় রেখে এগোনো ভালো। যে ওয়ারেন্টি পাওয়া যাচ্ছে, সেটির মাধ্যমে পুরো কভারেজ পাওয়া যাচ্ছে কি না তাও দেখতে হবে। নির্ভরযোগ্য ওয়ারেন্টি ও মানের বিষয়টি নিশ্চিত করতে ভলভো, রহিমআফরোজ এবং হামকোর মতো স্থানীয় নামকরা ব্র্যান্ডগুলো থেকেই কেনা যেতে পারে।