রাজশাহীর গোদাগাড়ীর চরে শত্রুতা করে এক ব্যক্তির আট বিঘা জমির ফসলে আগাছা দমনের বিষ ছিটিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই বিষ ছিটিয়ে দেওয়ার পর থেকেই জমির সরিষা, কলাই এবং ভুট্টার গাছগুলো পুড়ে যাচ্ছে। এরপর ফসল শুকিয়ে মরে যাচ্ছে।
এ ঘটনায় গোদাগাড়ীর প্রেমতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগি কৃষক ইসরাইল হক। উপজেলার চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের দিয়াড়মানিকচক গ্রামে তার বাড়ি। তার লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ ক্ষতিগ্রস্ত জমি পরিদর্শন করেছে।
ইসরাইল হক জানান, প্রায় ১৪ বছর আগে তিনি মোবারক আলী মাস্টার নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে মানিকচক মৌজায় ৩৪০২, ৩৪০৪ ও ৩৪০৬-৭ নম্বর দাগে ৮ বিঘা জমি কেনেন। এরপর থেকে জমিটি তার ভোগদখলেই আছে। কিছুদিন আগে হঠাৎ পাশের কেলাতোলা গ্রামের আবু বাক্কার ও তার তিন ভাই আসাদুল হক, গোলাম মোস্তফা এবং আবদুল কুদ্দুস জমিগুলো নিজেদের বলে দাবি করে বসেন। এরপর প্রায় ২০ দিন আগে তারা ইসরাইলের জমিতে থাকা কলাই গাছের ওপরেই হালচাষ করে দেন। এ নিয়ে তিনি থানায় মামলা করেন। এই মামলা চলমান অবস্থায় তিনি এবার ওই ৮ বিঘা জমির মধ্যে দুই বিঘায় ভুট্টা এবং তিন বিঘা করে জমিতে সরিষা চাষ করেন। কিন্তু গত বুধবার ভোরে তারা এসব ফসলের ক্ষেতে আগাছা দমনকারী বিষ ছিটিয়ে দেন। শুধু তাই নয়, জমিতে থাকা একটি শ্যালো ইঞ্জিনের সেচপাম্পের পাইপগুলো ভেঙে ফেলা হয়েছে। পাম্পের ভেতর ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে ময়লা আবর্জনা এবং কাঠের খণ্ড।
ইসরাইল বলেন, আট বিঘা জমিতে কমপক্ষে ৮০ হাজার টাকার ভুট্টা, ৩০ হাজার টাকার সরিষা এবং ২৫ হাজার টাকার কলাই উৎপাদন হতো। এসব ফসল চাষে তিনি এরই মধ্যে অনেক টাকা খরচ করেছেন। এখন তিনি মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
ইসরাইল হক জানান, তিনি ভূমি অফিসে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছেন কেলাতোলা গ্রামের মৃত মোসলেম আলীর এই চার ছেলে জালিয়াতি করে জমিটি নিজেদের নামে খারিজ করেছেন। কাগজপত্রে দেখানো হয়েছে- এই জমির ওপর ইসরাইল হকের কোনো দাবি নেই। তার ছেলে ইসমাইল হোসেনেরও এই জমিতে কোনো দাবি নেই। অথচ গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ইসমাইল নিখোঁজ রয়েছেন। ভূমি অফিসকে ‘ম্যানেজ’ করে সম্পূর্ণ জালিয়াতির মাধ্যমে এই কাজটি করা হয়েছে বলে দাবি ইসরাইল হকের।
আবু বাক্কার বলেন, জমিগুলো তার বাবার। কিন্তু মোবারক মাস্টার দখল করে রেখেছিলেন। তিনি সে জমি ইসরাইলের কাছে বিক্রিও করেছিলেন। তারা চার ভাই উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে আবেদন করে এই জমি নিজেদের নামে খারিজ করেছেন। এই কর্মকর্তা কীভাবে তাদের নামে জমি খারিজ করে দিয়েছেন তা তিনি বলতে পারবেন না।
প্রেমতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ইসরাইল হকের অভিযোগ তিনি তদন্ত করছেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শনও করেছেন। তবে তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করবেন না।
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন