নিখোঁজের চার বছরেও কুমিল্লার লাকসামের সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য ও বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম হিরুসহ অপর বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবির পারভেজকে উদ্ধার করা যায়নি। এদিকে নিখোঁজ ওই দুই ব্যক্তির ফিরে আসার অপেক্ষায় প্রহর গুনছে পরিবার।
সোমবার লাকসাম দৌলতগঞ্জ বাজারস্থ বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার মিল প্রাঙ্গণে এ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। লাকসাম উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডাঃ নুর উল্লাহ রায়হানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য কর্নেল (অবঃ) এম আনোয়ারুল আজিম। বক্তব্য রাখেন নিখোঁজ বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম হিরুর একমাত্র ছেলে রাফসানুল ইসলাম, অপর নিখোঁজ বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবির পারভেজের স্ত্রী শাহনাজ আক্তার, ছেলে শাহরিয়ার, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম খোকন প্রমুখ।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় দুটি মাইক্রোবাসযোগে র্যাব-১১ একটি দল লাকসাম উপজেলা বিএনপি সভাপতি ও সাবেক এমপি সাইফুল ইসলাম হিরুর লাকসাম দৌলতগঞ্জ বাজারস্থ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার মিলে অভিযান চালিয়ে সেখানে থাকা এক্সিম ব্যাংক লাকসাম শাখার ম্যানেজার আকতারুজ্জামান, স্থানীয় ব্যবসায়ী আলাউদ্দিন, সফিকুল ইসলাম লিটন, বিএনপি নেতা মঞ্জুরুল আলম বাচ্চু এবং ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী বুদেব চন্দ্র সাহা, মোমিন, দেলোয়ার, শাহআলম, অঞ্জন সাহাসহ ৯জনকে আটক করে। এসময় তারা মিলের ক্যাশে থাকা ১৪ লক্ষ টাকা নিয়ে যায়। এদিকে অভিযানের ঘণ্টা খানেক পর সড়ক পথে এ্যাম্বুলেন্স যোগে লাকসাম থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে সাইফুল ইসলাম হিরু ও হুমায়ুন কবির পারভেজসহ তাদের সফর সঙ্গী জসিম উদ্দিনকে পথিমধ্যে র্যাব-১১ এর ওই দল আটক করে নিয়ে যায়। এরপর ওই দিন রাতেই আটককৃতদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম হিরু এবং হুমায়ুন কবির পারভেজ ছাড়া জসিমউদ্দিনসহ আটককৃত ১০জনকে র্যাব-১১এর ক্রাইম প্রিভেনশন-২ কুমিল্লা শাকতলার ডিএডি শাহজাহান আলী লাকসাম থানায় সোপর্দ করে। এরপর থেকে নিখোঁজ ওই দুই নেতার সন্ধান আজো মেলেনি। পরে ওই ১০জনকে একটি হত্যা মামলায় আটক দেখিয়ে পরের দিন লাকসাম থানা পুলিশ কুমিল্লা আদালতে প্রেরণ করে।
এদিকে নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের তথ্য উদঘাটিত হওয়ার পর পরই বিএনপির শীর্ষ ওই দুই নেতাকে অপহরণ ও গুমের অভিযোগ এনে গত বছরের ১৮মে র্যাব-১১এর তৎকালীন সিও কর্নেল তারেক সাঈদ, র্যাব-১১ কোম্পানি কমান্ডার-২ মেজর শাহেদ রাজি, ডিএডি শাহজাহান আলী, এসআই কাজী সুলতান আহমেদ, এসআই অসিদ কুমার রায়কে আসামি করে কুমিল্লার আদালতে মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার আইনজীবী এডভোকেট মুহাম্মদ বদিউল আলম সুজন বলেন, সিআইডি তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে এ পর্যন্ত অসংখ্যবার সময় নিয়েছে, আমরা অপেক্ষায় আছি। সিআইডি তদন্ত রিপোর্ট জমা দিলে ওই অপহরণ ঘটনার মূল রহস্য বেরিয়ে আসবে।
বিডি প্রতিদিন/২৭ নভেম্বর ২০১৭/হিমেল