কুষ্টিয়ার চাল বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়েছে। কয়েকটি পাইকারি ও খুচরা দোকান ঘুরে সামান্য জরিমানা করলেও ধান চালের মোকাম খাজানগরের অটোমেটিক চালকলে যাননি আভিযানিক দল। সেখানে তথ্য সংগ্রহ করেছে মনিটরিং দল। এভাবে অভিযান চালিয়ে ২-৪ হাজার টাকা জরিমানা করে লাভ হবে না বলছেন সচেতন নাগরিক। চালের সিন্ডিকেট ভাঙতে হলে উন্মুক্ত আমদানির সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়ার চৌড়হাসে চালের দোকান থেকে অভিযান শুরু করে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর হায়দার। অভিযানে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, খাদ্য অধিদপ্তর ও পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা অংশ নেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর হায়দার বলেন, প্লাস্টিকের বস্তায় চাল রাখা, মূল্য তালিকার সঙ্গে দরের সমন্বয় না থাকার অভিযোগে ৩টি দোকানকে ২ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কুষ্টিয়ার সহকারী পরিচালক সুচন্দন মন্ডল আরো ১টি দোকানিকে ৬ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন।
চাল মজুদ বা অতিরিক্ত দামে বিক্রির বড় কোন অনিয়ম পায়নি বলে জানিয়েছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর হায়দার।
বাজারে অভিযান করা হলেও অভিযান চালানো হয়নি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধান-চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগরে। বৃহস্পতিবার সকালে এখানকার অটোমেটিক মিলগুলোতে ঘুরে এসেছেন খাদ্য অধিদপ্তরের একটি মনিটরিং দল। সদর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা আব্দুল খালেকের নেতৃত্বে এই দলে ছিলেন কারিগরি খাদ্য পরিদর্শক প্রবোদ কুমার পাল, জগতি খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মজুমদার ও সদর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইসমাইল আদম। সুশান্ত কুমার মজুমদার বলেন, আমরা অটোমেটিক মিলগুলোর মজুদ পর্যবেক্ষণ করেছি। কিন্তু নিয়মে তাদের যে পরিমাণ মজুদ থাকার কথা তার চেয়ে বেশি পাইনি। আর তাদের ধান ক্রয়ের রশিদ ও চাল বিক্রির দর নিয়ে এসেছি। এগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
এছাড়াও জেলা সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক এহসানুল ইসলামের নের্তৃত্বে খাদ্য বিভাগের আরো একটি দল বাজারে দর মনিটরিং করেছে।
এ ব্যাপারে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা বলেন, মিল পর্যায়ে অভিযানের আগে আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি। ২/৩ দিনের মধ্যে আমরা সেখানে অভিযানে নামবো। তিনি বলেন, অভিযানগুলো সমন্বিত হবে। এখানে মজুদ, মূল্যবৃদ্ধিসহ লাইসেন্স, পাটের বস্তার ব্যবহার, মূল্য তালিকাসহ সব অনিয়ম ধরা হবে।
এসব ব্যাপারে কুষ্টিয়া সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি রফিকুল আলম টুকু বলেন, বাজারে যে অভিযান চালানো হয়েছে তাতেও কিছুটা কাজ হবে। কারন পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারাও বেশি লাভ রেখে বিক্রি করে। তবে এই ২-৪ হাজার টাকা জরিমানা করে কিছু হবে না। দৃষ্টান্তুমূলক সাজার ব্যবস্থা থাকতে হবে। আর ধান-চালের সিন্ডিকেট না ভাঙতে পারলে কিছু করা সম্ভব হবে না বলেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। কারণ করপোরেট কোম্পানিগুলো এখন ধান কিনে মজুদে নেমেছে। তাই আমদানি উন্মুক্ত করে দেয়ার পরামর্শ দেন তিনি। বলেন, সবাই আমদানি করতে পারলে কেউ আর বেশি দাম রাখতে পারবে না। দাম নেমে আসবে।
বিডি প্রতিদিন/এএ