থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সেনারা সীমান্তে পূর্বের অবস্থানে ফিরে যাবে বলে জানিয়েছেন থাইল্যান্ডের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই। ২৮ মে সীমান্ত এলাকায় প্রাণঘাতী সংঘর্ষের পর দুই দেশই সেখানে সেনা বাড়িয়েছিল। এরপর রোববারের আলোচনায় এমন সিদ্ধান্ত হয়।
উল্লেখ্য, ২৮ মে সংঘর্ষে একজন কম্বোডিয়ান সেনা নিহত হন। এরপর থেকে দুই দেশই শান্তিপূর্ণ সমাধানে পৌঁছাতে চায় বলে বারবার ঘোষণা দিয়ে আসছে।
থাই প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর ভাষ্যমতে, দুই দেশ ২০২৪ সালে যে সীমান্ত চুক্তি করেছিল, সেই অনুযায়ী আগের অবস্থানেই ফিরবে। সেই সঙ্গে ১৪ জুন যৌথ সীমান্ত কমিটির বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি পুরোপুরি সমাধান হবে বলে আশা করছেন তিনি।
এদিকে, থাইল্যান্ড সীমান্ত এলাকার ১০টি চেকপোস্টের সময়সূচি কমানো হয়েছে নিরাপত্তাজনিত কারণে। সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টার পরিবর্তে এখন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সীমান্ত পথ খোলা থাকবে। এর মধ্যে সবচেয়ে ব্যস্ত চেকপোস্ট সা কাও প্রদেশেও সময় কমানো হয়েছে।
কম্বোডিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক চিঠিতে সীমান্ত বিরোধ আন্তর্জাতিক আদালতে (ICJ) নিয়ে যাওয়ার দাবি জানিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রাক সোখোন বলেছেন, এই বিরোধ দীর্ঘদিনের, ঐতিহাসিক এবং সংবেদনশীল। তাই শুধু দুই দেশের আলোচনায় স্থায়ী সমাধান সম্ভব না। আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ই হতে পারে ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই পথ।
তবে থাইল্যান্ড বলেছে, তারা আন্তর্জাতিক আদালার এখতিয়ার মানে না। তারা সীমান্তসংক্রান্ত সব সমস্যা পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান করতে চায়।
উল্লেখ্য, থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে সীমান্ত বিরোধ শত বছরের পুরোনো। ১৯০৭ সালে ফরাসিরা যখন কম্বোডিয়ার ঔপনিবেশিক মানচিত্র তৈরি করে, তখন থেকেই কিছু অংশ চিহ্নিত না হওয়ায় বিরোধ চলে আসছে। ২০০৮ সালে একাদশ শতাব্দীর একটি হিন্দু মন্দির ঘিরে সংঘর্ষ শুরু হয়, যা ২০১১ সালে গোলাবর্ষণের পর্যায়ে গড়ায় এবং এতে অন্তত এক ডজন মানুষ প্রাণ হারায়।
বর্তমান দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী—থাইল্যান্ডের থাকসিন সিনাওয়াত্রার কন্যা ও কম্বোডিয়ার হুন সেনের পুত্র— এই নেতাদের মধ্যে বন্ধুত্ব সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও সীমান্তে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এখন সব দৃষ্টি ১৪ জুনের বৈঠকে—যেখানে হয়তো নির্দিষ্ট কোনো সমাধানের পথে আগাবে দুই দেশ।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল