বরিশালের বাকেরগঞ্জে এক কিশোরীকে ধর্ষণের দায়ে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া শিশুর ভরণপোষণের দায়িত্ব দণ্ডিত আসামিকে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহা. রকিবুল ইসলাম এই রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত যুবক সুজন বৈরাগী বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার বেবাজ গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার বরাতে ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী আজিবর রহমান জানান, ধর্ষণের শিকার কিশোরী (১৫) ও দণ্ডিত সুজন একই পাড়ার বাসিন্দা ছিলেন। কিশোরীর বাড়িতে টিভি না থাকায় প্রায়ই সে সুজনের ঘরে টিভি দেখতে যেত। ২০১৬ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি, বিয়ের প্রলোভনে সুজন বৈরাগী তাকে পাশের গ্রামের একটি গ্রামীণ ব্যাংক অফিসে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন। এতে কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে এবং ওই বছরের ১২ নভেম্বর একটি পুত্রসন্তান জন্ম দেয়।
এই ঘটনার তিন দিন পর, ১৫ নভেম্বর, ধর্ষিত কিশোরীর মা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরিশালের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. এনায়েত উল্লাহ তদন্ত শেষে একমাত্র সুজন বৈরাগীকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
বিচারক ৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে দোষ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। পাশাপাশি এক লাখ টাকা জরিমানা করেন।
রায়ে আরও উল্লেখ করা হয়, ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া সন্তান তার মায়ের কাছেই থাকবে এবং পিতৃপরিচয়ে কোনো ব্যাঘাত ঘটানো যাবে না। ২১ বছর বয়স পর্যন্ত সন্তানের ভরণপোষণ মাসে ১০ হাজার টাকা করে দণ্ডিত আসামিকে দিতে হবে। তিন বছর পর পর এই পরিমাণ এক হাজার টাকা করে বাড়বে। নির্ধারিত অর্থ পরিশোধ না করলে সুজন বৈরাগীর ভবিষ্যৎ সম্পদ থেকে তা আদায়যোগ্য হবে।
বিডি প্রতিদিন/আশিক