জাতীয় সংসদের আসন পুনর্বিন্যাস প্রক্রিয়ায় বাগেরহাটের একটি আসন কমিয়ে তিনটি করার প্রতিবাদে শুক্রবার দ্বিতীয় দিনেও বাগেরহাট সদরসহ রামপাল, মোংলা, শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ ও কচুয়ায় বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ করেছে বিএনপি, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সাথে সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ। তারা সংসদীয় আসন পুনর্বহালের দাবিতে শনিবার সকাল থেকে জেলার সব মহাসড়ক লাগাতর আবরোধ করে মোংলা বন্দরকে সারা দেশের সাথে বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার কর্মসূচি দিয়ে মাঠে নেমেছে। এজেলার একটি আসন কমিয়ে দেয়ায় ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা পড়েছেন চরম বিড়ম্বনায়। রাজনৈতিক মহল, সাধারণ মানুষ, এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এনিয়ে বইছে সমালোচনার ঝড়। এদিকে বাগেরহাটের পূর্বের চারটি আসন পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে বলিখিত আবেদন করেছেন বাগেরহাট-৪ (শরণখোলা-মোরেলগঞ্জ) থেকে বিএনপি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী জাতীয়তাবাদী তাঁতীদলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ড. কজী মনিরুজ্জামান মনির।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, নতুন বিন্যাস অনুযায়ী বাগেরহাটে চারটির স্থলে তিনটি সংসদীয় আসন করা হয়। আসনগুলো হচ্ছে বাগেরহাট-১ (ফকিরহাট, মোল্লাহাট, চিতলমার), বাগেরহাট-২ (সদর, কচুয়া, রামপাল) ও বাগেরহাট-৩ (মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা, মোংলা)। এই আসনগুলের মধ্যে উপকূলের অবহেলিত উপজেলা শরণখোলা ও মোরেলগঞ্জ রয়েছে। বাগেরহাট ৪ নামের এই আসনটি বরবরই শিক্ষা, সংস্কৃতি ও উন্নয়ন থেকে পিছিয়ে। এই পরিস্থিতিতে আসনটি কেটে সংসদীয় আসন বাগেরহাট -৩ করে মোংলা উপজেলার সঙ্গে যুক্ত করায় উন্নয়নসহ সার্বিক দিক থেকে আরো পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে রাজনৈতিক ও সামাজিক মহল।
এ ব্যাপারে বিএনপি থেকে বাগেরহাট-৪ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী জাতীয়তাবাদী তাঁতীদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির বলেন, নির্বাচন কমিশনের ঘোষণায় জেলাবাসি হতবাক হয়েছে। এমনিতেই বাগেরহাট-৪ আসনে ২০টি ইউনিয়ন। উপকূলীয় দুর্গম এলাকা। উন্নয়ন বরাদ্দ কম। এই আসনটি কেটে মোংলার সাথে বাগেরহাট-৩ আসনে যুক্ত করা হলে জটিলতা আরো বাড়বে। সংসদীয় আসন পুনর্বহালের দাবিতে সিইসির কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছি। ইসি যদি সিদ্ধান্ত বাতিল না করে তাহলে সর্বস্তরের জনগণকে নিয়ে শনিবার থেকে মহাসড়ক আবরোধ করে লাগাাতর কঠোর আন্দোলনে রাজপথে নামবো।
ইসলামী আন্দোলনের মনোনীত প্রার্থী মাওলানা ওমর ফারুক নূরী বলেন, নির্বাচন কমিশনের বাগেরহাটে আসন কমিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব জনআকাংখার পরিপন্থি। যেখানে বাগেরহাটে আরো নির্বাচনী আসন বাড়ানো দরকার, সেখানে আসন কমানোর সিদ্ধান্ত মেনে নেয়া হবেনা। কঠোর আন্দোলন করে জেলাসহ মোংলা বন্দর অচল করে দেয়া হবে।
জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ আব্দুল আলীম বলেন, একটি আসন কমিয়ে মোরেলগঞ্জ শরণখোলাকে মোংলার সাথে যুক্ত করা নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ যোগ্য নয়। এটি বাতিলের জন্য সর্বস্তরের জনগণ মাঠে নেমেছে। শনিবার থেকে মহাসড়ক আবরোধ করে লাগাাতর কঠোর আন্দোলনে করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এএ