জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের আগে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী, আওয়ামী দোসর শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিচারের দাবি ছিল আমাদের। চব্বিশের ৪ আগস্টের আগ পর্যন্ত যারা খুনি হাসিনার পক্ষে আন্দোলন করেছে তাদের বিচার কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার দাবি ছিল আমাদের। কিন্তু সেসব দাবি উপেক্ষা করে ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তড়িঘড়ি করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। নির্বাচন দিতে পারলেই যেন বেঁচে যায় তারা। ছাত্রলীগ ও আওয়ামী দোসরদের বিচার না করে ডাকসু নির্বাচন হলে সেটি হবে প্রশ্নবিদ্ধ।’ গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। নাছির উদ্দীন বলেন, ‘আমাদের দাবিগুলো ছিল খুবই যৌক্তিক। নির্বাচন আয়োজনের বিষয়টি ইতিবাচক; কিন্তু আওয়ামী দোসরদের বিচারের পর ডাকসু নির্বাচন আয়োজন করা গেলে বিষয়টি কল্যাণকর হবে বলে আমি মনে করি।’
তিনি বলেন, ‘অভ্যুত্থানের পর প্রায় এক বছর সময় পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত ছাত্রলীগ ও আওয়ামী দোসরদের বিচার প্রক্রিয়ার দৃশ্যমান কিছু দেখাতে পারেনি। এখন পর্যন্ত আওয়ামী দোসর শিক্ষকদের বিচার হয়নি। এসব দাবি উপেক্ষা করে ছাত্র সংসদ নির্বাচন করলে সেটি কল্যাণকর হবে না। জাতীয় পর্যায়ে অনেক সংস্কার কার্যক্রম চলছে। ঐকমত্য কমিশন করা হয়েছে কিন্তু ছাত্র সংসদ আয়োজনের আগে বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। ছাত্রলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা ডাকসু নির্বাচনের ভোটার তালিকায় রয়েছে। যারা শিক্ষার্থী তারাই ভোটার তালিকায় থাকবে- এই নীতির কারণে আর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বহিষ্কার না করায় তারা ভোটার তালিকায় থেকে গেছে। যারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে, তাদের বিচার হওয়া তো সবার দাবি।’
ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমরা ৪০ দফা সুপারিশ করেছিলাম। এর মধ্যে তিন থেকে চারটি সুপারিশ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ৩৭৭টি সংস্কারের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে রূপরেখা দিয়েছিলাম কিন্তু সেখান থেকে মাত্র এক থেকে দেড় শতাংশ রাখা হয়েছে। আমরা বলেছিলাম, ডাকসুতে যিনি সভাপতি হবেন তাকেও নির্বাচিত হতে হবে। হলগুলোতে প্রভোস্টরাই হন হল সংসদের সভাপতি। আমরা এ ব্যাপারেও বিরোধিতা করেছিলাম। এখন আমরা দেখছি, পুরোনো ধাঁচেই ডাকসু নির্বাচন হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের আরেকটি দাবি ছিল, ছাত্র সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রতি বছরের একটি নির্দিষ্ট ক্যালেন্ডার ইয়ার থাকবে। তাহলে নির্দিষ্ট সময়ে প্রতি বছর নির্বাচন হবে। কিন্তু সেটাও করতে পারেনি তারা। এই প্রশাসন শুধু একটি নির্বাচন দিয়ে হাঁফ ছেড়ে বাঁচতে চায়।’ নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে এই ছাত্রনেতা বলেন, ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদল অংশ নেবে। কিন্তু কীভাবে অংশ নেবে, প্যানেল হবে কি না, তা নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এটি নিয়ে আলোচনা চলমান রয়েছে।