দেশে প্রতি বছরই আমন মৌসুমে ঝাঁকে ঝাঁকে ইঁদুর এসে হাজার হাজার মেট্রিক টন ফসল খেয়ে ফেলে। ইঁদুরের হাত থেকে ফসল রক্ষায় কৃষি বিভাগ ও স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করা হয়। তার পরেও উৎপাদিত ফসলের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ ইঁদুরের পেটে চলে যায়। প্রতি বছর আমন মৌসুমে রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলায় ১০ লাখ থেকে ১২ লাখ ইঁদুর নিধন করা হয়। ইঁদুর নিধনের ফলে প্রতিবছর মোট উৎপাদনের ১০ শতাংশ আমন ধান রক্ষা করা সম্ভব হয়।
এর পরেও প্রতি বছর রংপুর অঞ্চলে বিপুল পরিমাণ আমন ধান ইঁদুরের কারণে কৃষকরা গোলায় তুলতে পারে না। আমনের মোট উৎপাদনের ৬ শতাংশ ইঁদুরের পেটে যায়। প্রতি মৌসুমে গমের মোট উৎপাদনের ১০ শতাংশ, আলুর ৬ শতাংশ, শাক সবজির ৫ শতাংশ, নারিকেলের ১০ শতাংশ ও আনারসের ১০ শতাংশ ফলন রাক্ষুসি ইঁদুররা ভক্ষণ করে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এই অঞ্চলের ৫ জেলা রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী ও গাইবান্ধা জেলায় প্রতি বছর সোয়া ৬ লাখ হেক্টরের বেশি জমিতে আমনের আবাদ হয়। প্রতি বছর ফলন হয় ২০ লাখ মেট্রিক টনের বেশি। ইঁদুর নিধন করে ১০ শতাংশ ধান রক্ষা হলে প্রতি বছর কমপক্ষে ২০ হাজার মেট্রিক টন ধান রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে।
ইঁদুর নিধন করে গত ১০ বছরে ২ লাখ মেট্রিক টন ধান রক্ষা করা গেছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। সেই সাথে গত ১০ বছরে সোয়া কোটির ওপর ইঁদুর নিধন করা সম্ভব হয়েছে। অপর দিকে প্রতিবছর ৬ শতাংশ ধান ইঁদুরের পেটে যায়। সেই হিসেবে প্রতিবছর ১০ থেকে ১১ হাজার মেট্রিক টন ধান ইঁদুর খাচ্ছে।
কৃষি বিভাগ জানায়, সেপ্টেম্বরের শেষে অথবা অক্টোবর মাসের প্রথম দিকে ইঁদুর নিধন কার্যক্রম শুরু হবে। কৃষি বিভাগ ও স্থানীয়দের সহয়োগিতায় ইঁদুর নিধন করা হবে।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রায় সারা বছরই ফসল রক্ষায় ইঁদুর নিধনে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ইঁদুর নিধন করে ফসল রক্ষা হচ্ছে। তবে ধানের একটি অংশে এখনো ইঁদুর ভাগ বসায়।
বিডি প্রতিদিন/এমআই