চলতি বছরের অক্টোবর মাসে রাশিয়া ইউক্রেনে সর্বোচ্চ পরিমাণ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ইউক্রেনের বিমান বাহিনীর তথ্য বিশ্লেষণ করে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, শুধু গত মাসে রাশিয়া ইউক্রেনে ২৭০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যা আগের মাসের তুলনায় ৪৬ শতাংশ বেশি।
এই হামলাগুলো মূলত রাতের বেলা পরিচালিত হয়েছে এবং ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামো লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে। এর ফলে ব্যাপকভাবে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতা দেখা দিয়েছে, যার প্রভাবে দশ হাজারেরও বেশি মানুষ অন্ধকারে দিন কাটাচ্ছে। এটি পরপর চতুর্থ বারের মতো ইউক্রেনের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ধ্বংসের চেষ্টা রাশিয়ার।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে দেশের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা চালিয়ে ‘অরাজকতা’ সৃষ্টি করতে চাইছে। তিনি জানান, রাশিয়ার উদ্দেশ্য হলো নাগরিকদের মধ্যে ভয় ও মানসিক চাপ তৈরি করা, যাতে তাদের প্রতিরোধের শক্তি দুর্বল হয়।
অক্টোবর মাস জুড়ে ইউক্রেনের প্রতিটি অঞ্চলে, এমনকি রাজধানী কিয়েভেও বিদ্যুৎ ঘাটতি মোকাবিলায় পর্যায়ক্রমে লোডশেডিং চালু করতে হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গত বছর রুশ সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের জ্বালানি স্থাপনায় হামলার অভিযোগে যুদ্ধাপরাধের দায়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। আদালতের অভিযোগ অনুযায়ী, এসব হামলায় অসংখ্য বেসামরিক মানুষের জীবন ও জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এএফপি’র বিশ্লেষণ অনুযায়ী, রাশিয়া শুধু ক্ষেপণাস্ত্রই নয়, অক্টোবর মাসে ৫,২৯৮টি দূরপাল্লার ড্রোন ইউক্রেনের বিভিন্ন শহর ও জ্বালানি স্থাপনায় হামলার জন্য পাঠিয়েছে। যদিও সেপ্টেম্বরে তুলনায় এই সংখ্যা ছয় শতাংশ কম, তবু তা এখনও রেকর্ডের কাছাকাছি।
অন্যদিকে, ইউক্রেনও পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার তেল ডিপো ও রিফাইনারিতে হামলা চালাচ্ছে, যাতে রাশিয়ার জ্বালানি রপ্তানি ব্যাহত হয় এবং দেশটিতে জ্বালানি সংকট তৈরি হয়।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইউক্রেনের উপর এই হামলাগুলো শুধুমাত্র সামরিক নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি মানসিক ও অবকাঠামোগত চাপ সৃষ্টির এক পরিকল্পিত কৌশল।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল