অনুমোদিত টাঙ্গুয়ার এক্সপ্রেস ট্রেন চালুসহ আট দাবিতে রাজধানীর মগবাজার রেলগেটে ট্রেন আটকে বিক্ষোভ করেছেন ঢাকাস্থ সিলেট অঞ্চলের মানুষ। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত ‘বৃহত্তর সিলেটবাসী’র ব্যানারে তাঁরা এ বিক্ষোভ করেন। এ সময় দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস ট্রেন ১০ মিনিট আটকে রাখেন। পরে রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দাবির বিষয়ে বিবেচনার আশ্বাস দিলে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের (কমলাপুর) স্টেশনমাস্টার আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মগবাজারে রেলপথ অবরোধকারীরা সরিষাবাড়ী-তারাকান্দিগামী অগ্নিবীণা ট্রেন ১০ মিনিট আটকে রাখেন। পরে ছেড়ে দেন। তবে এতে অন্য কোনো ট্রেনের বিলম্ব ঘটেনি।’ আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র সেলিম আহমেদ বলেন, ‘আমরা আজকের কর্মসূচি শেষ করেছি। মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে দাবিগুলো দ্রুত বিবেচনার। দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে ১৮ নভেম্বর রেল মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করা হবে।’ ঢাকাস্থ বৃহত্তর সিলেটবাসীর আট দফার মধ্যে রয়েছে ঢাকা-সিলেট রেলপথে অনুমোদিত টাঙ্গুয়ার এক্সপ্রেস দ্রুত চালু ও সিলেট-ঢাকা রুটে দুটি এবং সিলেট-কক্সবাজার রুটে একটি স্পেশাল ট্রেন চালু, আখাউড়া-সিলেট রেলপথ সংস্কার ও ডাবল লাইনে উন্নীতকরণ, এ সেকশনে অন্তত দুটি লোকাল ট্রেন চালু, এ সেকশনের বন্ধ সব স্টেশন পুনরায় চালু, সিলেটের সব স্টেশনে বরাদ্দ আসন বৃদ্ধি, সিলেট-ঢাকাগামী কালনী ও পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনের আযমপুরের পর ঢাকামুখী সব স্টেশনে যাত্রাবিরতি প্রত্যাহার, ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় রোধে ত্রুটিমুক্ত ইঞ্জিন ব্যবহার এবং যাত্রী অনুপাতে প্রতিটি ট্রেনে অতিরিক্ত বগি সংযোজন।
শিডিউল বিপর্যয়, ভোগান্তি : নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট জানান, সিলেট-ঢাকা ও সিলেট-কক্সবাজার দুটি স্পেশাল ট্রেন চালু, আখাউড়া-সিলেট রেলপথ সংস্কার ও ডুয়েলগেজ ডাবল লাইনে উন্নীতকরণ, টিকিট কালোবাজারিরোধ, আখাউড়া-সিলেট সেকশনে লোকাল ট্রেন চালু এবং বন্ধ সব স্টেশন চালুসহ আট দফা দাবিতে রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এতে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটে। চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। ‘৮ দফা দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’-এর উদ্যোগে গতকাল সিলেট-ঢাকা রেলপথের বিভিন্ন স্থানে এ কর্মসূচি পালিত হয়। বিকাল পর্যন্ত কোনো ট্রেন সময়মতো ছেড়ে যেতে বা গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেনি। এতে দিনভর যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। সকাল ১০টা থেকে সিলেট রেলওয়ে স্টেশন, মৌলভীবাজারের ভানুগাছ ও শমসেরনগর স্টেশনে বিক্ষুব্ধ লোকজন অবরোধ করেন। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলে এ অবরোধ।
কালনী এক্সপ্রেস যথাসময়ে সিলেট স্টেশন থেকে ছেড়ে গেলেও অবরোধের কারণে নির্ধারিত সময়ে ঢাকায় পৌঁছাতে পারেনি। এ ছাড়া সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রামগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ছেড়েছে দুই ঘণ্টা পর। চট্টগ্রাম জয়ন্তিকা এক্সপ্রেসও সিলেট রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছেড়েছে নির্ধারিত সময়ের পর। সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম জানান, অবরোধ কর্মসূচির কারণে নির্ধারিত সময়ে ট্রেন ছেড়ে যেতে পারেনি। যে কারণে গন্তব্যে পৌঁছাতেও দেরি হয়েছে।