চট্টগ্রাম নগরীর আলোচিত সাজ্জাদ হত্যার পেছনে ছিল পরিবহন চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ। মূলত চাঁদার টাকায় ভাগ বসাতে গিয়ে নিজের কর্মীকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছেন বহিষ্কৃৃত যুবদল নেতা এমদাদুল হক বাদশা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। যদিও কাদের গুলিতে সাজ্জাদের মৃত্যু হয়েছে সেটি এখনো নিশ্চিত নয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নগরীর নতুন ব্রিজ গোলচত্বরের পরিবহন থেকে চাঁদার ভাগ না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিলেন বহিষ্কৃৃত যুবদল নেতা এমদাদুল হক বাদশা। এর জেরেই গত সোমবার গভীর রাতে দুই পক্ষের গোলাগুলিতে খুন হন সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী সাজ্জাদ। এ ঘটনায় সাবেক ছাত্রদল নেতা বোরহান উদ্দিনকে প্রধান আসামি করে বাকলিয়া থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। গণপরিবহন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি নতুন ব্রিজ থেকে নিউমার্কেটে (১৭ নম্বর রুট) চলাচল করা ম্যাক্সিমা চাঁদায় ভাগ বসাতে মরিয়া হয়ে ওঠেন এমদাদুল হক বাদশা। এ ব্যাপারে তিনি পরিবহন শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা বিষয়টি গাজী সিরাজ উল্লাহর অনুসারী বোরহানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু রাজনৈতিক জুনিয়র বোরহানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে নারাজ ছিলেন বাদশা। এ নিয়ে বাদশা এবং বোরহানের মধ্যে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব তৈরি হয়।
জানা যায়, গত সোমবার বিকাল ৪টা ১৪ মিনিটে নজরুল ইসলাম সোহেলের মোবাইলে কল দেন বাদশা। এই সোহেল সাজ্জাদ হত্যা মামলার দ্বিতীয় আসামি। এদিন সকালে চাঁদার টাকার জন্য ১৭ নম্বর রুটের চট্টগ্রাম অটোটেম্পু শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম রবিনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন বাদশার লোকজন। কিন্তু রবিন বলেছিল, বোরহান না বললে কোনো টাকা দেওয়া যাবে না। এর জের ধরেই বিকালে বাকলিয়া এক্সেস রোড এলাকায় বাদশা তার অনুসারীদের নিয়ে শোডাউন দিয়েছিলেন।
প্রতক্ষদর্শী সূত্র জানায়, সংঘর্ষের আগে বাদশা বিভিন্ন স্থান থেকে তার লোকজন এনে এক্সেস রোডের বিভিন্ন গলিতে জড়ো করেন। এ সময় অনেকের হাতে অস্ত্র দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকাবাসী। অনেকেই দোকানপাট বন্ধ করে বাসাবাড়িতে চলে যান। রাত ১টা ৪ মিনিটে শুরু হয় গোলাগুলি। এ ঘটনায় নিহত হন সাজ্জাদ। বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দীন বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই বাদশা ও বোরহানের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। তবে পরিবহনের চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে কি না তা নিশ্চিত নই। এ ব্যাপারে পুলিশ কাজ করছে।
এদিকে সাজ্জাদকে বাদশা ছাত্রদল কর্মী দাবি করলেও তার সঙ্গে পলাতক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান নওফেল, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমানসহ বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের মিছিল ও মিটিংয়ে সরব উপস্থিতির ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।