রাজধানীর আকাশ গতকাল দুপুরের পর থেকেই ছিল মেঘলা। বিকালের দিকে আকাশ আরও কালো হয়ে যায়। ঝরতে থাকে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। সন্ধ্যা নামার আগেই বিকাল ৫টার পর থেকেই শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি। এতে রাজধানীর সড়কও অলিগলিতে হাঁটুপানি জমে যায়। ভোগান্তিতে পড়েন রাজধানীবাসী। বিশেষ করে অফিস ফেরতরা পড়েন দুর্ভোগে। ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে টাঙ্গাইল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সাতক্ষীরা, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মোন্থা দুর্বল হয়ে লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে রাজধানীসহ দেশজুড়ে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশে সর্বোচ্চ ১৬২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোন্থার প্রভাব এখনো রয়েছে। এর প্রভাবেই দেশজুড়ে বৃষ্টি হয়েছে। এই বৃষ্টি গতকাল দুপুর থেকে শুরু হয়ে আরও কয়েক দিন চলতে পারে। তিনি আরও বলেন, শুক্রবার থেকে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা ছিল। গতকাল বিকাল থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রাজধানীতে ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে সিরাজগঞ্জের তাড়াশে-১৬৬ মিলিমিটার। কাজী জেবুন্নেছা বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে আরেকটি লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভারী বৃষ্টিতে নিউমার্কেট, পল্টন, কাকরাইল, শান্তিনগর, রামপুরা, মতিঝিল, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, মিরপুর, ধানমন্ডি, কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় সড়কে হাঁটু পানি জমেছে। এতে দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ। বৃষ্টির কারণে দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট। সব মিলিয়ে অফিস ফেরত সাধারণ মানুষ পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। বিশেষ করে যারা দ্রুত বাসায় ফেরায় টানে রিকশা কিংবা অটোরিকশায় চড়ে বসেছেন, তাদের গুনতে হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া। যাটজটের দোহাই দিয়ে এমনিতেই রিকশাওয়ালারা স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি ভাড়া দাবি করেন, বৃষ্টি নামলে তাদের দাম যেন আরও চড়া হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে দ্বিগুণ ভাড়া দিয়েই চলাচল করতে হয় যাত্রীদের। গতকালও তার ব্যতিক্রম হয়নি। গুলশান লিংক রোডে কথা হয় আয়েশা সুলতানার সঙ্গে। তিনি গুলশানে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তিনি বলেন, সন্ধ্যায় অফিস শেষে বের হয়ে পড়েছি বিপদে। বের হয়ে দেখি তুমুল বৃষ্টি। যানবাহন পাওয়া যাচ্ছে না। যাবেন রামপুরা। রিকশা-সিএনজির চালকরা চেয়েছেন দ্বিগুণ ভাড়া। অগত্যা দ্বিগুণ ভাড়ায় রিকশা নেন তিনি। লিংক রোডে এসে পড়েন যানজটে।
নওগা প্রতিনিধি জানান, গতকাল সন্ধ্যায় টানা ভারী বৃষ্টিতে নওগাঁর বিভিন্ন উপজেলার আমনসহ বিভিন্ন সবজির খেতের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে সরিষা, ফুলকপি, পিঁয়াজ, আলুসহ বিভিন্ন সবজির বীজতলা পানিতে তলিয়ে যায়। একই অবস্থা বগুড়া, রংপুরসহ বিভিন্ন জেলায়।