১০ বছরের ব্যবধানে যুক্তরাষ্ট্রে বিষণ্নতায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ১৮ শতাংশ বেড়েছে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জরিপ সংস্থা ‘গ্যালোপ’-এর জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। জরিপে আরও উঠেছে, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির প্রত্যাশা প্রতিনিয়ত মুখ থুবড়ে পড়ায় দেশটিতে হতাশাগ্রস্ত তরুণ-তরুণীর সংখ্যাও উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। ১৬ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত জরিপের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছর বিষণ্নতায় আক্রান্ত মার্কিনির হার ৩৫.১ শতাংশ। ২০১৭ সালে অর্থাৎ করোনার আগে তা ছিল ২২.১ শতাংশ। বার্ষিক আয় ২৪ হাজার ডলারের কম পরিবারের সদস্যদের মাঝে এ হার গত আট বছরে বেড়েছে ১৩ শতাংশ। আর ৩০ বছরের কম বয়সি যুবসমাজে বেড়েছে ২৬.৭ শতাংশ। ইয়েল ইউনিভার্সিটির বিষণ্নতা গবেষণা সেন্টারের পরিচালক, মানসিক রোগবিষয়ক অধ্যাপক ড. জেরার্ড স্যানাকোরা এ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমে বলেছেন, ‘বিষণ্নতা ছড়িয়ে পড়ার গতি খুবই ভয়ংকর এবং উদ্বেগ তৈরি করেছে।
এ অবস্থার অবসানে যত দ্রুত সম্ভব যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় তা যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ স্বপ্ন তছনছ করতে পারে।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) সর্বশেষ তথ্যানুসারে, বিশ্বে ১ বিলিয়নের বেশি মানুষ এখন বিষণ্নতায় আক্রান্ত। উল্লেখ্য, এ রোগে আক্রান্তের বড় একটি অংশ প্রতি বছর আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। বিষণ্নতায় ভোগাদের মধ্যে শিশুরাও রয়েছে। তাই বিষয়টিতে অবহেলা-অবজ্ঞার অবকাশ থাকতে পারে না বলে অভিমত চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল স্কুলের ডিপ্রেশন ক্লিনিক অ্যান্ড রিসার্চ প্রোগ্রামের পরিচালক ড. ডেভিড মিসকলোন এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘করোনা মহামারি বিষণ্নতার বর্তমান অবস্থার জন্য দায়ী। কারণ করোনা মহামারির মধ্য দিয়ে সামাজিক ব্যবস্থায়ও পরিবর্তন এসেছে। মানুষ পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। একাকিত্ব এবং পরবর্তীতে অর্থনৈতিক সংকট গোটা মানবতাকে দুশ্চিন্তায় আচ্ছন্ন করেছে; যা থেকে উত্তরণের সহজ উপায় অধিকাংশ মার্কিনির জানা নেই।’