হোয়াইট হাউসে সাংবাদিক সম্মেলনের সময় অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনের (এবিসি) সাংবাদিক জন লায়ন্সের সঙ্গে তীব্র বাকবিতণ্ডায় জড়িয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ঘটনাটি আন্তর্জাতিক পরিসরে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত লায়ন্সের এক প্রশ্নকে ঘিরে। তিনি ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেন, দ্বিতীয় মেয়াদে জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তিনি কতটা ধনী হয়েছেন। উত্তরে ট্রাম্প বলেন, আমি জানি না আমার সম্পদের অবস্থা কী, কারণ আমার ব্যবসা এখন আমার সন্তানেরা পরিচালনা করছে।
তবে প্রশ্নের ধরন নিয়ে চটে গিয়ে ট্রাম্প সাংবাদিক জন লায়ন্সকে বলেন— আপনি অস্ট্রেলিয়ার ক্ষতি করছেন। অস্ট্রেলিয়া আমার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায়। আমি শিগগিরই অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের সঙ্গে সাক্ষাৎ করব এবং লায়ন্সের ব্যাপারে তাকে অবহিত করব।
লায়ন্স আরেকটি প্রশ্ন করতে চাইলে, ট্রাম্প আঙুল ঠোঁটে দিয়ে তাকে ‘চুপ’ করতে বলেন এবং অন্য এক সাংবাদিকের দিকে এগিয়ে যান। এই মুহূর্তটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং সমালোচনার ঝড় ওঠে।
ট্রাম্পের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিক জন লায়ন্স বলেন, ন্যায্য প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করাকে বন্ধুত্বের ক্ষতি হিসেবে দেখা অযৌক্তিক। তিনি এবিসিকে জানান, তার প্রশ্নগুলো গবেষণাভিত্তিক ছিল এবং কোনোভাবেই অপমানজনক নয়। এবিসি জানায়, এই প্রশ্নগুলো তাদের অনুসন্ধানী অনুষ্ঠান ফোর কর্নারস-এর অংশ, যেখানে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে তার ব্যবসার আর্থিক কর্মকাণ্ড নিয়ে অনুসন্ধান চলছে।
ঘটনার কিছু পরেই হোয়াইট হাউসের একটি অফিসিয়াল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্টে এই ঘটনার ভিডিও প্রকাশ করা হয়। সেখানে লেখা হয়, ট্রাম্প একজন অভদ্র বিদেশি ভুয়া সংবাদ পরিবেশনকারীকে উচিত শিক্ষা দিলেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্ক কিছুটা উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ট্রাম্প প্রশাসন ২০২২ সালে স্বাক্ষরিত ‘অকাস’ সাবমেরিন চুক্তি (যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য-অস্ট্রেলিয়া) পুনর্বিবেচনার ঘোষণা দিয়েছে। চুক্তির আর্থিক পরিমাণ ছিল ২৩৯ বিলিয়ন ডলার। এছাড়া, গত এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্র অস্ট্রেলিয়ার সব ধরনের রপ্তানির ওপর অন্তত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ এ বিষয়ে বলেন, ‘এটি কোনো বন্ধুর কাজ নয়।’ তিনি আরও জানান, আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নিতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন এবং নিউইয়র্কে ট্রাম্পের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তথ্যসূত্র : দ্য গার্ডিয়ান ও বিবিসি।
বিডি-প্রতিদিন/শআ