দেশের ফুটবলের পাইপলাইন শক্তিশালী করতে বসুন্ধরা কিংস যে উদ্যোগ নিয়েছিল তা দারুণভাবেই এগিয়ে চলছে। গত বছর ইউরোপিয়ান ক্লাবের আদলে বয়সভিত্তিক ফুটবল একাডেমির কার্যক্রম শুরু করেছিল দেশের অন্যতম সেরা ক্লাবটি। নিজস্ব স্টেডিয়ামের পাশাপাশি সবুজ টার্ফেতে নিজেদের পায়ে রঙিন স্বপ্ন বুনছে আগামীর ফুটবলাররা। এক বছরে নিজেদের কতটুকু গড়তে পেরেছেন তা দেখতে একাডেমির বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজন করা হয় বসুন্ধরা কিংস একাডেমি ফিউচার লিজেন্ডস ফুটবল টুর্নামেন্ট। খুদে ফুটবলারদের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট অভিভাবক, কোচ ও সংশ্লিষ্টরা। আগামীর তারকাদের খেলা দেখে রীতিমতো অবাক হয়েছেন তারা।
গতকাল ছিল টুর্নামেন্টের ফাইনাল। এদিন বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটিতে ছিল উৎসবের আমেজ। স্পোর্টস সিটির প্যাডেল কোর্টে সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় গুলশান ক্লাব আয়োজিত তিন দিনব্যাপী প্যাডেল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ডে। এ ছাড়া গতকাল ছিল এক্সট্রিম স্পোর্টস আয়োজিত করপোরেট ফুটসাল টুর্নামেন্টের প্রথম দিন। ফলে সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটিতে ছিল উৎসবের আমেজ।
বিকালে বসুন্ধরা কিংসের অনুশীলন মাঠে অনূর্ধ্ব ১৬-১৮ গ্রুপের শিরোপার লড়াই করে আত্রাই ও শীতলক্ষ্যা। ম্যাচে শীতলক্ষ্যাকে ২-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে ট্রফি জেতে আত্রাই। প্রথমার্ধের ২৯ মিনিটে আসিফের গোলে এগিয়ে যায় শীতলক্ষ্যা। দ্বিতীয়ার্ধে খেলায় ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে আত্রাই। ৫৮ মিনিটে সানির গোলে সমতায় ফেরে তারা। কিছুক্ষণ পরেই শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন হিমন। তার গোলেই জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়ে টিম আত্রাই। এ ছাড়া সন্ধ্যায় ফুটসাল গ্রাউন্ডে অনূর্ধ্ব ১১-১৫ গ্রুপের ফাইনালে মুখোমুখি হয় নাইটিঙ্গেল ও কিং ফিশার। দারুণ খেলা উপহার দেয় নাইটিঙ্গেলের খুদে ফুটবলাররা। কিং ফিশারকে পাত্তাই দেয়নি তারা। দলটিকে ৫-০ গোলে হারায় নাইটিঙ্গেল। একই মাঠে অনূর্ধ্ব ৬-১০ গ্রুপের ফাইনালে জয় পায় টিউলিপ। সানফ্লাওয়ারকে ২-১ গোলে হারায় তারা। রাতে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান ও দলের নতুন আর্জেন্টাইন কোচ মারিও গোমেজ।
টুর্নামেন্ট চলাকালে একাধিক অভিভাবক জানান, তারা খুবই খুশি। সন্তানরা দারুণ খেলছেন। এক বছরে দারুণ উন্নতি লক্ষ্য করেছেন বলেও জানান তারা। এ সময় বসুন্ধরা কিংসের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর বায়েজিদ আলম জুবায়ের নিপু বলেই ফেলেন, ‘আমি ইমপ্রেসিভ। আমরা এতটাও ভাবিনি, তারা টুর্নামেন্টে যেমন পারফরম্যান্সে করেছে। যারা নিয়মিত টুর্নামেন্ট দেখেছেন তারা বলতে পারবেন কতটুকু উন্নতি করেছে তারা। অভিভাবকরা দারুণ খুশি।’ আমরা প্রশিক্ষণার্থীদের পারফরম্যান্সে কনফিডেন্স পাচ্ছি। ট্রেনিং প্রক্রিয়াটা তারা দ্রুত রপ্ত করতে পারছে। আমরা এটুকু বুঝেছি যে, আমরা ঠিক পথেই আছি।
টুর্নামেন্টে কিংসের বয়সভিত্তিক তিনটি গ্রুপ ৬ থেকে ১০, ১১ থেকে ১৫ এবং ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সিদের ২২টি দল অংশ নেয়। বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটির চারটি ফুটসাল টার্ফ এবং বসুন্ধরা কিংসের অনুশীলন মাঠে অনুষ্ঠিত হয় ম্যাচগুলো। ৬ থেকে ১০ এবং ১১ থেকে ১৫ বছর বয়সিদের আটটি গ্রুপে ভাগ করা হয়। ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সিদের ছয়টি দল। তিন ক্যাটাগরির এ দলগুলোর নাম রাখা হয়েছে ফুল, নদী ও পাখির নামে।