দিনাজপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও কৃষকের জমিতে থোকায় থোকায় ঝুলছে বিদেশি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন রামবুটান ফল। লিচু, কাঠলিচু ইত্যাদি ফলের সাথে এর রয়েছে সাদৃশ্য। রামবুটান দেখতে অনেকটা লিচুর মত, তবে এর ত্বক লোমশ এবং আকারে কিছুটা বড় হয়ে থাকে।
এর আকার মাঝারি ধরনের এবং বর্ণ লাল। ফলন ভালো আর পুষ্টিকর ও সুস্বাদু ফল হওয়ায় এবং ভালো দাম পাওয়ায় অনেকে তার বাগানে আসছেন এবং চাষের আগ্রহ প্রকাশ করছেন।
রামবুটান চীন, মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি উৎপন্ন হয়। বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলেও এর চাষ শুরু হয়েছে। চাহিদা ও লাভজনক হওয়ায় দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার কপালদাড়া গ্রামে চাষে সফলতা পেয়েছেন মোঃ আ. রহমান। এখন তার বাগানে লাল রঙের এ ফলটি গাছের ডালে ডালে থোকায় থোকায় ঝুলছে রামবুটান। যেহেতু এ অঞ্চলের মাটিতে ফলন ভালো হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে চাষের অপার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
চাষে সফল চাষী আঃ রহমান বলেন, প্রবাসে চাকরি করাকালীন সময়ে রামবুটান ফলের সাথে পরিচিত হয়। দেশে ফেরার সময় সঙ্গে নিয়ে আনেন এ ফলের বীজ কিন্তু সে বীজ দিয়ে চারা তৈরিতে ব্যর্থ হয়। পরে ইউটিউব দেখে ফরিদপুর জেলা থেকে এবার চারা গাছ আনি। ৬ বছর আগে বাড়ি সংলগ্ন নিজের জমিতে ১০টি চারা গাছ রোপন করি। গতবছর একটি গাছে সীমিত আকারে কিছু ফল দেখা দেয়। কিন্তু চলতি মৌসুমে এবার তার ৩টি গাছে ব্যাপক ফলন হয়েছে। প্রতিটি গাছে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ কেজি রামবুটানের ফলন হয়েছে। পুরোপুরি পাকার আগেই বাগানেই বিক্রি করছেন প্রতি কেজি হাজার টাকা দরে।
তিনি আরও বলেন, জৈব সার আর অল্প সেচ দিয়ে রামবুটান ফলের চাষ করা যায়। ইতিমধ্যে চাষীদের মাঝে এ ফল ছড়িয়ে দিতে নিজের বাগানে কলম চারা তৈরি প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।
স্থানীয় একই গ্রামের মশফিকুর রহমান বলেন, প্রতিদিনই অচেনা এ ফল দেখতে আ. রহমানের বাগানে ভীড় করছেন নানা বয়সের মানুষ।অনেকেই কিনে নিয়ে যান বাড়িতে। এছাড়া ভালো ফলন ও সুস্বাদু ফল হওয়ায় এ ফল চাষে অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন। নিচ্ছেন পরামর্শও।
নবাবগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার তাপস কুমার রায় বলেন, পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এ ফলটি উপজেলায় নতুন চাষ শুরু হয়েছে। চাষী আ. রহমান এ ফল চাষে সফল হয়েছেন। তার মত আরও অনেকেই এ ফলের গাছ রোন করেছেন। কৃষি বিভাগ থেকে চাষীদের পরামর্শসহ সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম