বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলে এখনো মাঠে নামেননি তিনি। অথচ তাকে ঘিরে আলোচনা তুঙ্গে। ইংলিশ ফুটবলে সান্ডারল্যান্ডের বয়সভিত্তিক দলে খেলা কিউবা মিচেল বসুন্ধরা কিংসে নাম লিখিয়েছেন। নতুন মৌসুমে দলবদল যখন ঢিমেতালে চলছিল তাতে প্রাণ ফিরিয়েছেন বাংলাদেশি বংশো™ভূত প্রবাসী ফুটবলার মিচেল। প্রবাসী বলেই তিনি স্থানীয় কোটায় খেলবেন। তবে ঘরোয়া ফুটবলের ইতিহাসে এই প্রথম ইংলিশ ফুটবলে খেলা কোনো ফুটবলার বাংলাদেশে খেলবেন। বয়স ১৯ হলেও ইংলিশ বয়সভিত্তিক আসরে আলোড়ন তুলেছেন। আরও বেশি আলোচিত হয়ে ওঠেন বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলার সম্ভাবনা নিয়ে। সব কাগজপত্র তৈরি তার, বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলতে সমস্যা নেই। কবে খেলবেন তা শুধু সময় বলে দেবে। এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ হংকংয়ের বিপক্ষে। সেই ম্যাচে কিউবা মিচেল হামজাদের সতীর্থ হবেন কি না, তা দেখার বিষয়।
যাক, জাতীয় দলে খেলার আগে বসুন্ধরা কিংসে কিউবা মিচেলের যে অভিষেক হচ্ছে তা নিশ্চিতই বলা যায়। কেননা, ১২ আগস্ট দোহায় এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে কিংসের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ রয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে সেদিনই তার কিংসের জার্সিতে অভিষেক হবে। সেপ্টেম্বরে আবার চ্যালেঞ্জ কাপ দিয়েই ঘরোয়া ফুটবলের যাত্রা হবে। কিংস ও মোহামেডান সেই ম্যাচে শিরোপা জিততে লড়বে। এখানেও কিউবা মিচেলকে দেখা যেতে পারে। বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান জানান, ‘চুক্তি যখন করা হয়েছে তখন কিউবা মিচেল সব আসরই খেলবে।’ নতুন মৌসুমে পাঁচ আসর হবে। মিচেলকে পেয়ে উজ্জীবিত কিংস। ১৪ আগস্ট দলবদলের কার্যক্রম শেষ হবে। তার আগেই কিংস যে মানের দল গড়েছে তাতে সেরা বলা ছাড়া কোনো উপায় নেই। দলে নেওয়া হয়েছে ঘরোয়া আসরে খেলা পরীক্ষিত বিদেশিদের। তারকায় ভরপুর লোকাল কালেকশন তো আছেই। কোচও নিয়োগ দিয়েছে সেই মানের।
ঘরোয়া ফুটবল মাঠে না গড়ালেও আলোচনা শুরু হয়েছে কিউবা মিচেলকে ঘিরে। তরুণ এ ফুটবলার কেমন খেলেন তা দেখতে মুখিয়ে আছেন দর্শকরা। খেলোয়াড় কালেকশনে বসুন্ধরা কিংসের চমক নতুন নয়। পেশাদার ফুটবলে অভিষেকের পর থেকেই। সত্যি বলতে কি- কমিটমেন্ট, পরিবেশ, পেশাদারির সব গুণাবলি আছে বলেই স্থানীয় ও বিদেশি সব সেরারা কিংসে খেলতে আগ্রহী। মাঠে নামার আগেই অনেককে ঘিরে আগেও আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে ১৯৮৬ সালের কথা না বললেই নয়। সেবার টানা চারবার লিগ জিততে ঢাকা আবাহনী উড়িয়ে এনেছিল চিমাওকোরি, মনোরঞ্জন ধর ও গোলরক্ষক ভাস্কর গাঙ্গুলিকে। মোহামেডানের বিপক্ষে নামার আগে তাদের ঘিরে সে কি আলোচনা। ধানমন্ডিতে তাদের প্র্যাকটিস দেখতেই হাজারো দর্শকের ভিড় ছিল। তাদের নামিয়েও আবাহনী ম্যাচ হারলে আলোড়ন পড়েছিল ঘরোয়া ফুটবলে। ১৯৮৭ সালে বিশ্বকাপ খেলা ইরাকের দুই ফুটবলার সামির সাকি ও করিম মোহাম্মদ মাঠে নামার আগেই আলোচিত ছিলেন। একই বছরে নাসের হেজাজি, নালজেগার ও এমেকাকে ঘিরেও আলোচনা ছিল। এবার হচ্ছে মিচেলকে নিয়ে। দেখা যাক তার পায়ের কৌশল দর্শকদের মন জয় করতে পারে কি না।