আইনগত সহায়তা প্রদান (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার বাধ্যতামূলক বিধান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। গতকাল বিকালে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের আওতাধীন জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার উদ্যোগে সিলেট নগরীর একটি হোটেলে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে আসিফ নজরুল বলেন, ‘প্রায়ই দেখবেন সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে বলছে আপনারা কী করছেন? মানুষজনের রক্তের ওপর আপনাদের বসাইছে। আপনারা কী করছেন? আমি বুঝতে পারি না এর আনসারটা কী? আমি তো ফুটবল প্লেয়ার না বা কোনো মঞ্চনাটকের অভিনেতা না। আমি যেটা করব, সেটা আপনারা দেখতে পারবেন। সেটা আপনাকে দেখতে হবে কাজের মধ্য দিয়ে। এই যে লিগ্যাল এইডের কাজ করলাম। এর বাইরে আমরা অনেক কাজ করেছি, যেটা বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো দিন হয়নি।’ আইনগত সহায়তা প্রদান কার্যক্রমকে সম্প্রসারণ এবং অধিকতর গতিশীল, জনবান্ধব ও সহজলভ্য করতে ১ জুলাই আইনগত সহায়তা প্রদান (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারি করা হয়। এটি বাস্তবায়নের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে এই অধ্যাদেশের তফসিলভুক্ত বিষয়গুলোতে (যেমন, পারিবারিক বিরোধ, পিতা-মাতার ভরণপোষণ, বাড়ি ভাড়া, যৌতুক ইত্যাদি) ১২টি জেলায় মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার বাধ্যতামূলক বিধান আজ থেকে কার্যকর হচ্ছে। আইন সহায়তা প্রদান (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ (২০২৫ সালের ৩৫ নম্বর অধ্যাদেশ) এর ধারা ১ এর উপ-ধারা (২) এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে পাইলট প্রকল্প হিসেবে সিলেট, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, ফরিদপুর, ময়মনসিংহ, রংপুর, দিনাজপুর, সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া, কুমিল্লা, নোয়াখালী, রাঙামাটি জেলায় এ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘আমরা সিভিল ও ক্রিমিনাল আদালত পৃথক করেছি, যাতে মামলার নিষ্পত্তি দ্রুতগামী হয়। এটা এর আগে কোনো দিন কেউ করেনি। আগে বিচারিক পদ সৃজনের ক্ষমতা পলিটিক্যাল মন্ত্রীদের হাতে ছিল, এটা আমরা চিফ জাস্টিস অফিসারের হাতে দিয়ে গেছি। সেই ফাইল আমরা নিজ হাতে গিয়ে সাইন করে নিয়ে এসেছি। পিয়নের মতো করে নিজে ফাইল নিয়ে গিয়ে সাইন করিয়েছি। আমরা যা যা করেছি, কোনো দিনই বাংলাদেশে এর আগে হয়নি।’
আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে মানুষজন যে সল্যুশন পায়, সেটার জন্য ১০০ জনের মধ্যে ৯০ জন আর কোর্টে যায় না। সেখানে মামলা নিষ্পত্তি হয়। অথচ প্রচলিত আদালতে যখন মামলা হয়, বিচারিক আদালতে মামলা হওয়ার পরও কেউ উচ্চ আদালতে যায় আপিল করার জন্য। লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে মানুষজন কম সময়ে কম খরচে বিচার পায়, অনেক কম ভোগান্তি হয়, অনেক বেশি মানুষ বিচার পায়।’