ধর্মীয় মৌলবাদ কে ভারতের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড় হুমকি বলে উল্লেখ করেছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি বলেছেন, দ্রুত একে নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে আগামীতে এটা সন্ত্রাসের আকার ধারন করবে।
উত্তর-পূর্ব ভারতের আটটি রাজ্যগুলির নিরাপত্তা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গিয়ে সন্ধ্যায় দিল্লিতে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির মুখ্যসচিব, পুলিশ প্রধানসহ স্বরাষ্ট্র বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজনাথ সিং।
ওই বৈঠকে আন্তর্জাতিক সীমান্তে ঘেরা ওই সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে ‘ইসলামিক রেডিকালাইজেশন’-এর শক্তি বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন কোন কোন এজেন্ট ধর্মের নামে কাজ করছে কেউ আবার এনজিও’এর নামে তাদের কর্মকান্ড চালাচ্ছে, কখনও আবার সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড বা শিক্ষার উন্নয়নের নামে এই ধর্মীয় মৌলবাদি শক্তিগুলি কাজ করছে। রেডিকালাইজেশন একটি আন্তর্জাতিক প্রক্রিয়া। একে প্রতিহত করাটা আমাদের কাছে একটা নতুন চ্যলেঞ্জ। আমরা যদি এখনি একে প্রতিরোধ করতে না পারি তবে এটা সন্ত্রানের রূপ ধারন করবে’।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন উত্তর-পূর্বাঞ্চল সংবেদনশীলতা ও সীমান্তবর্তী হওয়ার কারণে এই অঞ্চল ধর্মীয় মৌলবাদ মাথাচাড়া দিয়েছে। ফলে মৌলবাদীদের চিহ্নিতকরণ করা, তাদের গতিবিধির ওপর নজর রাখা এবং প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ’।
এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজু, উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং, দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল প্রমুখ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন ‘কিছু কিছু মৌলবাদী সংগঠন বিদেশ থেকে অর্থ পাচ্ছে। ফলে আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল বিদেশ থেকে আগত রুপির উৎস এবং সেটা কিভাবে খরচ করা হচ্ছে সেদিকে নজর রাখা’।
বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অশোক প্রসাদ জানান ‘পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানের খাগড়াগড় বিস্ফোরণের বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাত-উল-মুজাহিগিন বাংলাদেশ(জেএমবি) সম্পৃক্ততা থাকা অন্যদিকে অাসামে বাংলাদেশের আরেক জঙ্গি সংগঠন হরকত-উল-জিহাদি ইসলামি(হুজি)’র বিস্তারের প্রেক্ষিতেই মৌলবাদীদের হুমকির বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। এমনকি ইসলামিক স্টেট(আইএস)-এর মতো জঙ্গি সংগঠনও অল্পবয়সী যুবকদের নিজেদের দলে টানতে চাইছে বলে খবর পাওয়া গেছে। যদিও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে এখনও পর্যন্ত আইএস’এর কোন নির্দিষ্ট অস্তিত্ব পাওয়া যায় নি বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন ‘এই অঞ্চলে কিছু সংগঠন স্থানীয় মানুষকে জিহাদি কর্মকান্ডে যুক্ত করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। যদিও সেই অবস্থা কেরালার মতো হয়নি। তবে মৌলবাদী হুমকি প্রতিহত করতে এবং সতর্ক করতেই এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল’।