বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

চাক ভেঙে মধু খায় মধুবাজ পাখি

দীপংকর ভট্টাচার্য লিটন, শ্রীমঙ্গল

চাক ভেঙে মধু খায় মধুবাজ পাখি

মধুবাজ পাখি মূলত শিকারি পাখি বলেই পরিচিত। অন্য শিকারি পাখির মতোই তাদের পায়ের নখ, বাকানো ঠোঁট। তবে এই পাখির আরও একটি বৈশিষ্ট্য হলো, এরা মৌমাছির চাক ভেঙে মধু খায়। এ জন্য তাদের মধুবাজ পাখি নামেও ডাকা হয়। এই পাখির ইংরেজি নাম Oriental Honey-buzzard. আর বৈজ্ঞানিক নাম Pernix ptilorhyncus. এরা Accipitridae  গোত্রের শিকারি পাখি। সম্প্রতি চুয়াডাঙ্গার বেলগাছি পাখির গ্রাম থেকে এই পাখির ছবি তুলেছেন প্রকৃতিপ্রেমী ও শিক্ষক বখতিয়ার হামিদ। পাখি বিশারদরা জানান, এই পাখিদের দেখতে বাজ পাখির মতো দেখা গেলেও এরা কিন্তু বাজ পাখি নয়। এদের দেহ লম্বা সরু। মাথা ছোট। শরীরে রং বিচিত্র। বুক থেকে পেট ক্রিম-বাদামি। এর ওপর আবার আড়াআড়ি অসংখ্য সাদাটে-বাদামি টান। গলা সাদাটে। চোখ কমলা-লাল। ঠোঁট মেটে-কালো। পা ও পায়ের পাতা হলুদ। এপ্রিল থেকে জুন এদের প্রজননকাল। এরা বনের ফাঁকা জায়গা, আবাদি জমি বা বনবাগানে ডালপালা ও পাতা দিয়ে বাসা বাঁধে। ১ থেকে ৩টি ডিম দেয়। ডিমের রং ফিকে লালচে। ২৮ থেকে ৩৫ দিন পর ডিম ফেটে বাচ্ছা বের হয়। স্ত্রী-পুরুষ উভয়ে মিলেই বাচ্চাদের লালন করে। ৩৫ থেকে ৪০ দিনে বাচ্চারা বাসা থেকে উড়াল দেয়।

মৌচাকের মধু, মৌমাছির ডিম ও টুপ এদের খুব পছন্দের খাবার। এ ছাড়া এদের খাবার তালিকায় রয়েছে সাপ, ব্যাঙ, ইঁদুর ও গিরগিটি জাতীয় প্রাণীরা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনিরুল এইচ খান বলেন, মধুবাজ আমাদের দেশের আবাসিক পাখি। মোটামুটি সারা দেশ জুড়েই এদের বিচরণ। এরা শিকারি পাখি হলেও এরা প্রধানত মৌচাক ভেঙে মধু খায়। তাই এই পাখিকে মধুবাজ বলা হয়।

সর্বশেষ খবর