মুম্বাইয়ে বাংলাদেশি জাহাজে ‘রহস্যজনক মৃত্যু’ হওয়া নাবিক আবু রাশেদের (২২) দাফন হয়েছে যশোরের মনিরামপুর উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে। ওইদিন ভোরে তার লাশ বাড়িতে পৌঁছে। এরপর স্থানীয় ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়।
কুমারঘাটা গ্রামের আবদুর সবুর সরদার ও পারুল বেগমের ছেলে রাশেদ বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ একাডেমির ৪০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।
গত মার্চে জাহাজ এমভি মণিতে ডেক ক্যাডেট হিসেবে যোগ দেন তিনি। গত ৩০ মে ভারতের মুম্বাই বন্দরে নোঙর করা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়লে রাশেদকে সেখানকার একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন সকালে মারা যান তিনি। তবে রাশেদের মৃত্যু নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে তার স্বজনদের। রাশেদের বাবা সবুর সরদার বলেন, ‘আমার ছেলের মুখে-শরীরে কোনো দাগ ছিল না। শরীরে এত দাগ কোথা থেকে এলো। আমার আব্বুরে কী কষ্ট দিয়ে মেরেছে, আমি এর বিচার চাই’। রাশেদের মা পারুল বেগম বলেন, ‘মৃত্যুর আগের দিনও আমার সঙ্গে কথা হয়েছে। আমি ওর গলা শুনেই বুঝেছিলাম ও ভালো নেই। কত স্বপ্ন দেখত আমাদের নিয়ে। রাশেদের বড় ভাই রাসেল পারভেজ বলেন, ‘মাসখানেক আগে রাশেদ ফোন করে বলেছিল তার খুব জ্বর, কিন্তু ওরা চিকিৎসা করাচ্ছে না। ছুটি চাইলে তারা বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে আরও অসুস্থ করে ফেলে। কোনোভাবে ছুটির ব্যবস্থা করে ওকে নিয়ে আসতে বলেছিল।’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘রাশেদ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে ছুটি চাইলে তাকে বেশি করে ওভারটাইম করাত। বিভিন্ন ইনজেকশন দিত। ইনজেকশন দিলেই তার রক্তবমি হতো। ও বুঝতে পেরেছিল যে আর বাঁচবে না। আত্মীয়স্বজনদের কাছে ফোন করে মাফ চেয়ে নিয়েছিল।’ রাসেল পারভেজ তার ভাইয়ের মৃত্যুর সঠিক তদন্ত দাবি করেন। চট্টগ্রাম এসআর শিপিং লিমিটেড কোম্পানির নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম টুটুল বলেছেন, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ৩১ মে রাশেদকে মুম্বাইয়ের জেজে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হলে তার মরদেহ বিমানে দেশে আনা হয়। কোম্পানি থেকে রাশেদের পরিবারকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।