সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ডাক পেয়েছিলেন। সাদা বলের লড়াইয়ের জন্যই নিজেকে তৈরি করছিলেন এনামুল হক বিজয়। কিন্তু বলা যায় হঠাৎ করেই হাজির নতুন চ্যালেঞ্জ। ডাক পেলেন টেস্ট দলেও। সব ঠিক থাকলে জায়গা পাচ্ছেন একাদশেও। ঘরোয়া ক্রিকেটের অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যানের দাবি, টেস্ট ক্রিকেটই তার সবচেয়ে প্রিয় সংস্করণ। টেস্ট ক্রিকেটে ভালো করে বড় দৈর্ঘ্যের ক্রিকেটের প্রতি নিজের ভালোবাসার প্রমাণ দিতে চান তিনি।
এই মৌসুমের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে রানের বন্যা বইয়ে দিয়ে লম্বা সময় পর জাতীয় দলে ফেরেন এনামুল। সুযোগ পান ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের বাংলাদেশ ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলে। পরে ওয়েস্ট ইন্ডিজে ইয়াসির আলি রাব্বির চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়ায় টেস্ট দলেও যুক্ত করা হয় এনামুলকে। আগামীকাল শুক্রবার শুরু হতে যাওয়া সেন্ট লুসিয়া টেস্ট দিয়ে মাঠের ক্রিকেটেও ফিরতে যাচ্ছেন ২৯ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান।
ক্যারিয়ারের চার টেস্টের সবশেষটি তিনি খেলেছিলেন এই সেন্ট লুসিয়াতেই ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে। তখন স্টেডিয়ামের নাম ছিল বোশেজো স্টেডিয়াম। লম্বা সময় পর টেস্ট খেলার সামনে দাঁড়িয়ে স্বাভাবিকভাবেই রোমাঞ্চিত এনামুল। ভিডিও বার্তায় তিনি বললেন, সুযোগটি হারাতে চান না হেলায়।
বিজয় বলেন, এটা সত্যি যে আমি সাদা বলের ক্রিকেটে ডাক পেয়েছিলাম এবং সাদা বলে অনুশীলন করছিলাম। তবে আগেও অনেকবার বলেছি এবং নিজে বিশ্বাস করি, টেস্ট ক্রিকেট অনেক বেশি ভালোবাসি। এটা আমার মধ্যে অনেক বেশি তীব্রভাবে কাজ করে। যখন সুযোগ পাব, অবশ্যই লুফে নেওয়ার চেষ্টা করব। ৮ বছর পর টেস্টে ডাক পেয়েছি, আমার জন্য এটা বড় সুযোগ। আমি যে আসলেই টেস্ট পছন্দ করি, তা দেখানোর বড় সুযোগ এটি। আমি অবশ্যই রোমাঞ্চিত। প্রক্রিয়াটা অনুসরণ করব, যেভাবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট এতদিন ধরে অনুসরণ করে আসছি। নতুন করে কিছু বদলাতে চাই না। যেভাবে এতদিন খেলেছি মন দিয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে, সেটাই চেষ্টা করব দেশের জন্য করার।”
বড় দৈর্ঘ্যের ক্রিকেট যে তার পছন্দ, তা অবশ্য প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তিনি দেখিয়েছেন। ১০৫ ম্যাচ খেলে ২২ সেঞ্চুরি তার। বাংলাদেশের বাস্তবতায় সেঞ্চুরির এই হার অসাধারণ। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৪৫.৩২ গড়ে তার রান ৪ হাজার ৪৭৯। ২০১৪ সালে সবশেষ টেস্ট খেলার পর এবারের আগে ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে কোনো মৌসুমেই তার গড় ৩৭-এর নিচে নামেনি। ক্যারিয়ারের ২২ সেঞ্চুরির ১৪টিই করেছেন এই সময়ে।
তবে টেস্টের প্রতি ভালোবাসাই এনামুলের জন্য জ্বালানি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা তার কাছে প্রেরণার উৎস। তিনি বলেন, এটাই আমার সাহস, এটাই শক্তি। আমি মনে করি যে এটা আমাকে বাড়তি সাহস জোগায়, মনের কোণে থাকে, নিজেকে একটা জায়গায় নিয়ে গেছি যে এই জিনিসগুলো দেখলে আমার বাড়তি প্রেরণা বলুন বা আত্মবিশ্বাস, আসে এটা। অবশ্যই এটা আমাকে সাহায্য করবে। আমার জন্য এটা বড় অভিজ্ঞতা যে এতদিন ধরে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলেছি। প্রতিটি ক্রিকেটারের স্বপ্ন থাকে যে সে অভিজ্ঞ হবে এবং অভিজ্ঞতা কাজে লাগাবে। আমিও আশাবাদী যে অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে এবং দেশের হয়ে অবদান রাখতে পারব।
এনামুল আরও বলেন, আমি যদি সুযোগ পাই, নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব, যেন বাংলাদেশ দলকে ভালো একটা সংগ্রহ দিতে পারি স্কোরবোর্ডে। দ্রুত উইকেট পড়ে যাওয়াটা থামানো থেকে শুরু করে রানটাকে এগিয়ে নেওয়া, ওই জায়গাটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ