রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া কমপ্লেক্সেসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে হামলা-ভাঙচুরের প্রতিবাদে বরিশাল নগরে প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে।
রবিবার বরিশালের সাংবাদিক সমাজের আয়োজনে নগরের অশ্বিনী কুমার হলের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। বরিশালে কর্মরত সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে প্রতিবাদ সমাবেশে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ একাত্মতা প্রকাশ করেন।
সাংবাদিক সাইফুর রহমান মিরন, রফিকুল ইসলাম ও মুশফিক সৌরভের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, টেলিভিশন মিডিয়া অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. হুমায়ুন কবির, বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি সুশান্ত ঘোষ, বরিশাল প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কাজী আল মামুন, বরিশাল জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আযাদ আলাউদ্দীন, সাংবাদিক ফোরাম বরিশালের সাধারণ সম্পাদক শাহিন হাসান, দৈনিক ইত্তেফাকের বরিশাল ব্যুরো প্রধান শাহিন হাফিজ, সময় টেলিভিশনের বরিশাল ব্যুরো প্রধান অপূর্ব অপু, দীপ্ত টেলিভিশনের বরিশাল ব্যুরো প্রধান মর্তুজা জুয়েল, কবি ও সাংবাদিক সৈয়দ মেহেদি হাসান, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মাহাবুবুর রহমান পিন্টু প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ছাত্রদের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যখন একটি সুন্দর ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গড়ার কাজে সবাই এক হয়েছি। আর সেইসময় একটি মহল হঠাৎ করেই গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে। আবার তাদের অফিসগুলোতে হামলা-ভাংচুর চালানো হচ্ছে। আমরা সরকারকে বলতে চাই গণমাধ্যম ও তার কর্মীদের ওপর এ হামলা নতুন কোন ষড়যন্ত্রের পাঁয়তারা কিনা সেটি খতিয়ে দেখুন।
বক্তারা বলেন, রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া কমপ্লেক্সে হামলার ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। কারণ এ হামলার ভিডিও এরই মধ্যে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয়েছে। হামলাকারীদের ছবিও গণমাধ্যমগুলো প্রকাশ করেছে। কিন্তু তারপরও হামলাকারীদের কেউ এতদিনেই গ্রেফতার করেনি কিংবা কোনোভাবে আইনের আওতায় আনেনি। বিগত দিনে সাগর-রুনি হত্যাসহ সারাদেশে বহু সাংবাদিক নির্যাতন-হত্যার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু বিগত দিনের কোন সরকার এর সুষ্ঠু বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করেনি। তবে একটি বিপ্লবের মধ্য দিয়ে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নিয়ে আশাবাদী, আমরা বিশ্বাস করি সাংবাদিকদের ওপর হামলাসহ গণমাধ্যমে অফিসে হামলা-ভাংচুরের ঘটনায় এবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
বক্তারা আরও বলেন, বিগত দিনে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বা সাইবার নিরাপত্তা আইনের মতো কালো আইন করে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করে রাখার অপপ্রয়াস চালানো হয়েছে। আবার সম্প্রতি যে ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া কমপ্লেক্সেসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে হামলা-ভাঙচুরসহ গণমাধ্যম কর্মীদের ওপর হামলার যে ঘটনা ঘটেছে, তার কোনোটিতেই আমরা শিক্ষার্থী ভাইদের উপস্থিতি দেখতে পাইনি। যারা এ হামলা করছে তারা সমাজের দুর্বৃত্ত। আমরা অবিলম্বে এ আইন বাতিলের যেমন দাবি জানাচ্ছি, তেমনি গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমের কর্মীদের ওপর প্রতিটি হামলার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
সিনিয়র সাংবাদিক সাইদ মেমন এর সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আলিম ফরিদ, অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম খসরু, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কাওসার হোসেন রানা, বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মিথুন সাহা, তরুণ সাংবাদিক ফোরাম বরিশালের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মজিবুর রহমান নাহিদ, বরিশাল প্রেসক্লাবের পাঠাগার সম্পাদক খান রুবেল, সদস্য জাকির হোসেন, কে এম নয়ন, সাংবাদিক আরিফ হোসেন, তন্ময় নাথ প্রমুখ।
মানববন্ধনে একাত্মতা প্রকাশ করে অংশ নেয় বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন বরিশালের নেতাসহ বরিশাল নিউজ এডিটরস্ কাউন্সিল, বরিশাল অনলাইন প্রেসক্লাবের নেতারা।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০ টায় একইস্থানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে সংবাদ সংগ্রহকালে নিহত ৪ সাংবাদিকসহ সাগর-রুনির হত্যাকারীদের বিচার , আন্দোলনে আহত সাংবাদিকদের সু-চিকিৎসা, পুনর্বাসন ও বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেয়াড় দাবিতে মানববন্ধন করেছে বরিশাল জেলা সাংবাদিক ইউনিয়ন।
বরিশাল জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আযাদ আলাউদ্দীনের সভাপতিত্বে এ মানববন্ধনে বক্তারা ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া কমপ্লেক্সেসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় প্রতিবাদ ও নিন্দা জানায়। সেইসাথে হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন