জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় খালাস পেয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক মো. মাসুদ পারভেজ গতকাল এ রায় ঘোষণা করেন। মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাঁকে খালাস প্রদান করেন আদালত। এদিন প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে দুদকের করা আরও এক মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন মির্জা আব্বাস। এ ছাড়া জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা আরও এক মামলায় অব্যাহতি পেয়েছেন তিনি। গতকাল ঢাকার বিশেষ জজ আদালতের পৃথক দুই বিচারক এসব আদেশ দেন।
খালাসের পর নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন মির্জা আব্বাস। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজকে এ সরকারের কাছে আবেদন করব, এ ধরনের নিপীড়নমূলক মামলাগুলো যেন প্রত্যাহার করা হয়। এ ১৭ বছরে আমার জীবনে সমস্ত কিছু আওয়ামী সরকার কেড়ে নিয়েছে, ধ্বংস করে দিয়েছে। আমি না শুধু, আমার মতো বাংলাদেশের বহু নেতা-কর্মীর জীবন শেষ করে দিয়েছে। যে যেখানে থাকুক আল্লাহর বিচার থেকে কেউ রক্ষা পাবে না।’ এ প্রসঙ্গে মির্জা আব্বাসের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মহি উদ্দিন চৌধুরী বলেন, এসব মামলায় অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায় আদালত মির্জা আব্বাসকে খালাস দিয়েছেন।
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ৭ কোটি ৫৪ লাখ ৩২ হাজার ২৯০ টাকার সম্পদ অর্জন এবং ৫৭ লাখ ২৬ হাজার ৫৭১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর রমনা থানায় মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের উপপরিচালক মো. শফিউল আলম। মামলাটি তদন্ত শেষে ২০০৮ সালের ২৪ মে দুদকের উপপরিচালক মো. খায়রুল হুদা আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটে তাঁর বিরুদ্ধে ৪ কোটি ২৩ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ২২ লাখ টাকার সম্পত্তির তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়। ২০০৮ সালের ১৬ জুন মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরু হয়। বিচার চলাকালে ২৪ জনের সাক্ষ্য নেন আদালত। অবশেষে মামলা থেকে মির্জা আব্বাসকে খালাস দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা আরও এক মামলার দায় থেকে গতকাল তাঁকে অব্যাহতি দেন একই আদালত।
এ ছাড়া গতকাল মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে দুদকের করা আরেকটি মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক রবিউল আলম দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মীর আহমেদ আলী সালাম এ মামলা প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তাঁর বিরুদ্ধে বিচারাধীন মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন মঞ্জুর করেন। এ মামলার অন্য দুই আসামি হলেন বিএনপির সাবেক এমপি আলী আসগর লবী ও সরকারি কর্মকর্তা মাহফুজুল ইসলাম।