দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমদ সোহেল তাজ বলেছেন, আমাকে বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন মহল থেকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমার প্রাণের ওপর হুমকি এসেছে। হত্যার হুমকি পাচ্ছি। নিরাপত্তা নিয়ে আমি শঙ্কিত। এ বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়রি করব এবং সেনাপ্রধানের কাছেও যাব।
গতকাল বিকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর কাছে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সাক্ষাৎ শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এ সময় সাংবাদিকরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির হাল ধরছেন কি না, জানতে চাইলে সোহেল তাজ বলেন, আমি এই পচা, নোংরা, নষ্ট রাজনীতিতে ফিরতে চাই না। আমি আওয়ামী লীগকে বলব-আত্মসমালোচনা করা খুবই প্রয়োজন।
সাবেক এই স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে এই সরকারের সাফল্য কামনা করছি। আমি মনে করি, যে কোনো ভালো কাজ কিংবা রাষ্ট্র সংস্কারের কাজের জন্য আইনশৃঙ্খলার উন্নতি করা বড় একটি অংশ। সুশাসন পেতে হলে আইনের শাসন জরুরি। এ সময় তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগত একটি বিষয় নিয়ে এখানে এসেছিলাম।
সোহেল তাজ আরও বলেন, আমি একজন কর্মঠ মানুষ। প্রতিদিন আমাকে কাজ করতে হয়। বুধবার রাতে আমি যখন কাজ শেষ আমার ডিওএইচএস-এর বাসায় ফেরত যাচ্ছিলাম, তখন একটি মোটরসাইকেল চালক আমাকে ছায়ার মতো ফলো করে। আমি যখন সেনানিবাস দিয়ে ঢুকে যাই, তখন তিনি আমাকে থামতে বলেন। আমি দেখি তার শার্টের মধ্যে লাল-নীল লাইট জ্বলছে। তিনি আরও বলেন, আমি মনে করছি এখানে একটি অঘটন ঘটাবার পরিকল্পনা ছিল। আমি আজকে এই বিষয়গুলো স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অবহিত করতে এসেছি। আমি মনে করি বাংলাদেশের সব নাগরিকের ব্যক্তি নিরাপত্তার অধিকার আছে। আমি তাকে বলেছি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন অতি দ্রুত উন্নতি করেন।
তিনি এ বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি বর্তমানে সাধারণ নাগরিক হলেও আমার একটি পরিচয় আছে। আমি বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর সন্তান। সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। সেই পরিচয়ের কারণে অনেক মহল থেকে অনেক কিছু করার প্রয়াস থাকতে পারে। আমি সাধারণভাবে চলার চেষ্টা করলেও এই পরিস্থিতিগুলো আমাকে ছাড়ছে না। আমার অধিকার আছে সাধারণ নাগরিক হিসেবে বেঁচে থাকার।
কারা ফলো করেছে বলে মনে করেন এমন প্রশ্নের জবাবে সোহেল তাজ বলেন, আমি বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টার কাছে জানিয়েছি। সেনাবাহিনী প্রধানের কাছেও জানাব। আমি গতকাল (বুধবার) রাত ১০টা ৫১ মিনিট থেকে ৫৬ মিনিটের মধ্যে সেখানে প্রবেশ করেছিলাম। সেনাবাহিনীর প্রধানের কাছে অনুরোধ করব- আমি যে গেট দিয়ে ঢুকেছিলাম ওই গেটে হাই রেজুলেশনের ক্যামেরা রয়েছে। আমার বিশ্বাস- আমাকে যে মোটরসাইকেল ফলো করেছিল- তার লাইসেন্স বের করে পরিচয় সনাক্ত করা সম্ভব। এ সময় গুম-খুনের নিন্দা জানিয়ে সোহেল তাজ বলেন, ২০১৯ সালে আমার এক ভাগনেকে অপহরণ করে আয়নাঘরে ১১ দিন রাখা হয়েছিল। আমি সে সময় গুম-খুন এর প্রতিবাদ করেছিলাম। অনেক কায়দা-কষ্ট করে সে সময় আমার ভাগনেকে উদ্ধার করে এনেছিলাম। আমি বারবার বলেছিলাম এরকম ঘটনা ঠিক না। এমন ঘটনা বাংলাদেশে যেন আর না হয়। আমি একজন সাধারণ নাগরিক। আমার অবস্থান থেকে আমি সবসময় প্রতিবাদ করে এসেছি। হত্যা, গুম এবং মানুষের অধিকার বিলুপ্ত করা আমি কখনোই সমর্থন করি না, করব না।