রাজধানীর হাতিরঝিলে মহানগর প্রজেক্টে বাড়ি নির্মাণ ও ফ্ল্যাট ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে তানজিল জাহান ইসলাম তামিম (৩৪) হত্যার ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে হত্যার ঘটনাটি ঘটে। নিহত তামিম বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দীপ্ত টিভির সম্প্রচার কর্মকর্তা। তিনি জমির মালিক সুলতান আহমেদের ছেলে। বাড়ি নির্মাণ ও ফ্ল্যাট ভাগাভাগি নিয়ে ডেভেলপার কোম্পানির সঙ্গে বিরোধের জেরে জমির মালিকের ছেলেকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। গতকাল সকালে রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে এ সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার রুহুল কবির খান জানান, বৃহস্পতিবার থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত মালিবাগ ও রামপুরায় অভিযান চালিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন আবদুল লতিফ, কুরবান আলী, মাহিন, মোজাম্মেল হক কবির ও বাঁধন। তিনি বলেন, জমির মালিক ও প্লিজেন্ট প্রোপার্টি লিমিটেডের মধ্যে ভবন নির্মাণের চুক্তি ও ফ্ল্যাট হস্তান্তরের রেজিস্ট্রেশন হওয়ার পরও ডেভেলপার কোম্পানি তৃতীয় পক্ষের কাছে বিক্রি করে। এই ভবনের একটি ফ্ল্যাট কেনেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. মামুন। এই নিয়ে বিরোধের সূত্রপাত হয়। দীর্ঘদিন ধরে এ বিষয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার সকালে জমির মালিক ভবনের সাত তলায় নিজের ফ্ল্যাটে কাজ করতে যান। মামুনের সহযোগিতায় ডেভেলপার কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল লতিফসহ ২০-২৫ জনকে নিয়ে দীপ্ত টিভির সম্প্রচার কর্মকর্তা ও জমির মালিকের ছেলে তানজিল জাহান ইসলাম তামিমের ওপর হামলা করে। পরে আহত অবস্থায় তামিমকে মনোয়ারা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহতের বাবা সুলতান আহমেদ ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় একটি মামলা করেন। এক প্রশ্নের জবাবে মো. রুহুল কবির খান বলেন, আমাদের কাছে রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচ্য নয়। আমরা অপরাধ ও অপরাধী হিসেবে দেখছি। সে যে-ই হোক না কেন, তার দায় থাকলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আমরা চার্জশিট দেব। আমরা প্রাথমিকভাবে তার সম্পৃক্ততা পাচ্ছি। এই ঘটনায় কার কী ভূমিকা ছিল তা তদন্তে উঠে আসবে। এ ছাড়া মাদকের ওই কর্মকর্তাকে এই মামলায় ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে। আমরা তার সম্পৃক্ততার বিষয় তদন্ত করে দেখব। এ ছাড়াও বিএনপি নেতা শেখ রবিউল আলম রবি এ হত্যা মামলায় ৩ নম্বর আসামি।
অপর প্রশ্নের জবাবে বলেন, জমির মালিকের সঙ্গে ডেভেলপার কোম্পানির দ্বন্দ্ব। সুতরাং তার তো দায়ই থাকবে। বাকিটা তদন্তে উঠে আসবে। এক প্রশ্নের জবাবে রুহুল কবির খান বলেন, হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)-কে দায়িত্ব অবহেলার কারণে ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাকে (ওসি) দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তার দায়িত্ব অবহেলা পেয়েছি।