রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ২০১৪ সাল থেকে দুই দফায় ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালিয়েছেন। এটা দেশটির সার্বভৌমত্বকে অস্বীকার করার একটি প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইউক্রেনের জনগণের সাহসিকতার কারণে দেশটি এখনো পুরোপুরি দখল এড়াতে সক্ষম হয়েছে। তবে পুতিনের সামরিক আগ্রাসন অব্যাহত রয়েছে, যা ইউরোপের স্থিতিশীলতা এবং বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি তৈরি করছে।
ইউক্রেনের মিত্রদের কার্যকর সমর্থন ছাড়া এই সংঘাত আরও দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে যা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ইতোমধ্যেই যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি ও খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং পারমাণবিক নিরাপত্তার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্রদের একটি শান্তিচুক্তি তৈরির মাধ্যমে যুদ্ধের অবসান ঘটানোর জন্য দৃঢ় উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ইতিমধ্যে ১০ দফার একটি শান্তি প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন, যার মধ্যে রাশিয়ার পূর্ণ প্রত্যাহার, পারমাণবিক নিরাপত্তার জোরদারকরণ এবং সংঘাত মোকাবিলার পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এ প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যে জেলেনস্কি গত গ্রীষ্মে সুইজারল্যান্ডে ৯০টির বেশি দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। কিন্তু টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য শক্তিশালী নিরাপত্তার নিশ্চয়তা প্রয়োজন। কারণ রাশিয়া পূর্বে চুক্তি ভঙ্গ করেছে এবং আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি বারবার অবজ্ঞা প্রদর্শন করেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইউক্রেনের সামরিক অবস্থান শক্তিশালী করাই এখন অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। রাশিয়ার মিসাইল ও ড্রোন হামলায় ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিকরা নিহত হচ্ছেন, এবং এসব হামলা অনেক ক্ষেত্রে রাশিয়ার ভূখণ্ড থেকে পরিচালিত হচ্ছে। ইউক্রেনকে দূরপাল্লার অস্ত্র ব্যবহার করে রুশ বাহিনীর লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার অধিকার দেওয়া প্রয়োজন।
বিশ্বব্যাপী এই যুদ্ধের শেষ নির্ভর করছে ইউক্রেনের আত্মরক্ষার সক্ষমতার ওপর। পুতিনের শান্তিচুক্তিতে লাভবান হওয়া থেকে বিরত রাখার জন্য ইউক্রেনের মিত্রদের সমর্থন আরও বাড়ানো এবং দেশের ভেতরে প্রশিক্ষণ ও সামরিক সরঞ্জাম মেরামতের জন্য নতুন উদ্যোগ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল