নির্বাচনি প্রচারণায় কমলা - ট্রাম্প দেশকে পেছনের দিকে নিয়ে যেতে চান। তিনি ভয় এবং বিদ্বেষের রাজনীতি করেন। কিন্তু আমরা আইনের শাসন চাই। সাম্য এবং স্বাধীনতার মধ্যে বাঁচতে চাই
যুক্তরাষ্ট্রে রাজনীতির খেলায় নতুন মাত্রা শুরু হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রার্থী জো বাইডেন সরে যাওয়ার পর এখনো প্রার্থী ঠিক হয়নি। এ মনোনয়নের প্রত্যাশী বর্তমান মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। আর তিনিই কি না জরিপে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে গেলেন।
দিন কয়েক আগেও বিশেষজ্ঞরা মনে করছিলেন ‘অসংলগ্ন’ বাইডেনকে অনায়াসে হারিয়ে নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় বসবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু গত রবিবার বাইডেন নির্বাচনি লড়াই থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। তার বদলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে এগিয়ে রয়েছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। আর তার পরই চমক। মঙ্গলবার এক নতুন জরিপে দেখা গেল ট্রাম্পকে পেছনে ফেলে দিয়েছেন কমলা! রয়টার্স/ ইপসসের নতুন জরিপে দেখা যাচ্ছে যেখানে ট্রাম্প পেয়েছেন ৪২ শতাংশ ভোট, সেখানে কমলার ঝুলিতে ভোট ৪৪ শতাংশ।
গত সোমবার ও মঙ্গলবার এ জরিপ চালানো হয়। এর আগে ১৫ ও ১৬ জুলাই রয়টার্স/ইপসোসের এক জরিপে কমলা এবং ট্রাম্পের প্রতি ৪৪ শতাংশ ভোটার জনসমর্থন জানিয়েছিলেন। তার আগে ১ ও ২ জুলাইয়ের জরিপে ট্রাম্প কমলার চেয়ে মাত্র ১ শতাংশ ব্যবধানে এগিয়েছিলেন।
জনমত জরিপে কমলার প্রতি এভাবে সমর্থন বৃদ্ধির ব্যাখ্যায় ট্রাম্পের নির্বাচনি শিবির থেকে বলা হয়, ডেমোক্র্যাটিক পার্টি থেকে নতুন প্রার্থী হিসেবে বিশ্বজুড়ে গণমাধ্যমগুলো কমলাকে নিয়ে খবর প্রকাশ করছে। যে কারণে খুব সম্ভবত সাময়িকভাবে তার জনপ্রিয়তা বেড়ে গেছে বলে মত তাদের।
যদিও এখনো কমলা নমিনেশন পাননি, তবু ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিসেবে তার সম্ভাবনাই যে সবচেয়ে প্রবল তাতে নিশ্চিত সবাই। সে ক্ষেত্রে লড়াই ‘কাটায় কাটায়’ হতে চলেছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
প্রথম সমাবেশেই ট্রাম্পকে আক্রমণ কমলা হ্যারিসের : প্রচারে নেমে প্রথম সমাবেশেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ‘আক্রমণাত্মক’ বক্তব্য দিয়েছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। তিনি নভেম্বরের মার্কিন নির্বাচনকে ‘প্রাক্তন প্রসিকিউটর এবং দোষী সাব্যস্ত অপরাধীর মধ্যে একজনকে বেছে নেওয়ার’ লড়াই হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার উইসকনসিনে এ সমাবেশে কমলা বলেন, ট্রাম্প দেশকে পেছনের দিকে নিয়ে যেতে চান। তিনি ভয় এবং বিদ্বেষের রাজনীতি করেন। কিন্তু আমরা আইনের শাসন চাই। সাম্য এবং স্বাধীনতার মধ্যে বাঁচতে চাই।
কমলা আরও বলেন, ‘যারা নারী নির্যাতন করেন, নারীদের সম্মান করতে জানেন না, যারা সাধারণ মানুষের টাকা নয়ছয় করেন, নিজের স্বার্থে মানুষের সঙ্গে বেইমানি করেন তেমন মানুষদের আমি চিনি। ডোনাল্ড ট্রাম্পের চরিত্র আমি জানি।’
অন্যদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পও কমলা হ্যারিসের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তিনি ঘোষণা করেছেন, তিনি হ্যারিসের সঙ্গে বিতর্কে নামতে প্রস্তুত।
কমলার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে ট্রাম্প : ট্রাম্পের নির্বাচনি শিবির মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনে কমলা হ্যারিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। এতে দাবি করা হয়, আইনত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্বাচনি তহবিলের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেন না কমলা হ্যারিস। কারণ তিনি এখনও প্রার্থী নন। তাদের দাবি, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে নির্বাচনি প্রচারাভিযানে সবচেয়ে বড় আর্থিক অনিয়ম করতে যাচ্ছেন হ্যারিস।’