সিলেটের রাজনীতিতে সবসময় বড় ভূমিকা রাখেন প্রবাসীরা। নির্বাচন কিংবা কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে এ অঞ্চলের প্রবাসী রাজনীতিবীদরা বড় ভূমিকা রাখেন। কিন্তু গত ১৫ বছর শেখ হাসিনার শাসনামলে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত প্রবাসীরা স্বস্তিতে দেশে ফিরতে পারেননি। শুধু বিরোধী মতের রাজনীতি করার কারণে দেশে ফিরে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের অনেক নেতা-কর্মী মামলার আসামি হয়ে জেল খেটেছেন। বিদেশে আওয়ামীবিরোধী রাজনীতি করার কারণে সিলেটে বিএনপির অনেক নেতার বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনা ঘটেছে। আতঙ্কে অনেক নেতা পরিবারের সদস্যদের মৃত্যুর খবর পেয়েও দেশে ফেরার সাহস পাননি।
তবে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে বিএনপির প্রবাসী নেতারা দেশে ফেরা শুরু করেন। গত ১২ সেপ্টেম্বর দেশে ফেরেন প্রায় এক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত সাংবাদিক ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সহকারী প্রেস সচিব মুশফিকুল ফজল আনসারী। এর পর থেকে প্রতিদিনই বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসী রাজনীতিবীদরা সিলেটে ফিরছেন। ইতোমধ্যে যেসব নেতা দেশে ফিরেছেন তাদের মধ্যে আছেন সৌদি আরব বিএনপির সভাপতি আহমদ আলী মুকিব, যুক্তরাজ্য স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নাসির আহমদ শাহিন, যুক্তরাজ্য যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক দেওয়ান মোকাদ্দেম চৌধুরী নিয়াজ, যুক্তরাজ্য বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিসবাহুজ্জামান সুহেল, অ্যাডভোকেট খলিলুর রহমান, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান তপন, লন্ডন মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক শেখ সাদেক, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতা মোস্তফা কামাল পাশা মওদুদ, কাতার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফুল হক সাজু। চলতি মাসেই যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক ও সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমদের নেতৃত্বে পৃথক ফ্লাইটে কয়েক শ নেতা-কর্মী দেশে ফিরছেন বলে দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে। দেশে ফেরা প্রসঙ্গে যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমদ বলেন, স্বৈরশাসক শেখ হাসিনামুক্ত বাংলাদেশে আসতে পারছি, এই আনন্দের শেষ নেই। তবে সবচেয়ে বেশি আনন্দিত হব যেদিন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে দেশে ফিরতে পারব। সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ূম চৌধুরী জানান, গত ১৫ বছর প্রবাসী রাজনীতিবিদরাও নিরাপদ ছিলেন না। দেশে আসলেই তাদের মামলা-হামলার শিকার হতে হয়েছে। তাই স্বৈরাচার হাসিনামুক্ত দেশে ফিরতে নেতা-কর্মীরা উদগ্রীব।