হামাস কর্তৃক ইসরায়েলিদের কনসার্টে অতর্কিত হামলায় ১২ শতাধিক ইসরায়েলি তরুণ-তরুণীকে বর্বরোচিতভাবে হত্যা এবং ২৫১ জনকে অপহরণের পর গাজায় ইসরায়েলের নৃশংসতার বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ৭ অক্টোবর সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের সর্বত্র পরস্পরবিরোধী কর্মসূচি পালিত হলো। নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন ডিসি, ম্যারিল্যান্ড, ভার্জিনিয়া, ফিলাডেলফিয়া, লসএঞ্জেলেস, টেক্সাস, মিশিগান, শিকাগো, আটলান্টা, বস্টন প্রভৃতি স্থানের র্যালিতে লাখ লাখ আমেরিকান অংশ নেন। এর অধিকাংশই ছিল স্কুল-কলেজ-ভার্সিটির শিক্ষার্থী। পুলিশ প্রহরায় অনুষ্ঠিত র্যালি থেকে ইহুদিরা নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা, অবশিষ্ট ৬৪ অপহৃতকে অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানায়। অপরদিকে, ইসরায়েল কর্তৃক গাজায় নৃশংসতার নিন্দা ও প্রতিবাদকারীরা ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ স্লোগানে প্রকম্পিত করেন প্রধান প্রধান শহরের রাজপথকে। নিউইয়র্ক সিটির ইউনিয়ন স্কয়ার, টাইমস স্কয়ার, ওয়ালস্ট্রিটসহ সর্বত্র হাজার হাজার শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকেরা ইসরায়েলি আগ্রাসনের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। দিনভর কর্মসূচিতে থাকা ‘বাংলাদেশি আমেরিকান ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট’র প্রেসিডেন্ট খোরশেদ খন্দকার সন্ধ্যায় এ সংবাদদাতাকে জানান, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে স্লোগান প্রদানকারীরা প্রেসিডেন্ট বাইডেনেরও কঠোর সমালোচনা করেছেন। গত এক বছরে গাজায় ইসরায়েলে হামলায় ৪১ হাজারের অধিক ফিলিস্তিনির প্রাণ ঝরেছে, ধ্বংসলীলায় পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা। এই যুদ্ধের বিস্তৃতি ঘটছে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। র্যালি থেকে ইসরায়েলের নেতা নেতানিয়াহুর যতটা সমালোচনা হয়, তার চেয়ে ঢের বেশি করা হয় প্রেসিডেন্ট বাইডেনের। তারা অভিযোগ করেন, গাজা, লেবানন, সিরিয়াসহ বিভিন্ন্ন স্থানে ইসরায়েলের নৃশংসতায় মার্কিন অস্ত্র ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রতিনিয়ত তহবিল দেওয়া হচ্ছে ইসরায়েলকে।
নিউইয়র্ক সিটির সেন্ট্রাল পার্কের শোক-সমাবেশে ছিলেন স্টেট গভর্নর ক্যাথি হোকুল, ইউএস সিনেটের লিডার সিনেটর চাক শ্যুমার, প্রতিনিধি পরিষদে বিরোধীদলীয় নেতা কংগ্রেসম্যান হাকিম জেফরি, নিউইয়র্ক স্টেটের অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিসা জেমস, সিটি মেয়র এরিক এডামস। তারা ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদর্শন করলেও গত এক বছর ইসরায়েলি আক্রমণে নিহত ৪১ সহস্রাধিক ফিলিস্তিনির জন্য কিছু করেননি। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়েও এ উপলক্ষে পরস্পরবিরোধী কর্মসূচি পালিত হলেও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ফ্রি প্যালেস্টাইন স্লোগানদানকারীরা যেমন ফিলিস্তিনের স্কার্প পরেছিলেন, ঠিক তেমনি ইসরায়েলের পতাকা জড়িয়ে র্যালি করেছেন ইহুদিরা।