ক্রীড়া ফেডারেশনের কমিটি মানেই মোহামেডান-আবাহনীর দাপট। বিশেষ করে বড় তিন ফেডারেশন ফুটবল, ক্রিকেট ও হকিতে দুই দলের প্রাধান্য ছিল চোখে পড়ার মতো। অ্যাডহক বা নির্বাচন হওয়ার প্রথম দিকেই দল দুটির আশীর্বাদ ছাড়া কেউ বড় পদে বসতেন পারতেন না। আওয়ামী লীগের গত ১৬ বছর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে ঢাকা আবাহনীর দাপট ছিল তুঙ্গে। সভাপতি ছাড়াও অধিকাংশ পরিচালক পদে আবাহনীর সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা বসে ছিলেন। ক্রিকেটের যে কোনো কর্মকাে আবাহনী বা বেক্সিমকোর প্রভাব ছিল অন্যরকম। বেক্সিমকোর কর্মকর্তাও আবাহনীর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। দু-এক জন পরিচালক ছাড়া ১৬ বছরে ক্রিকেটে মোহামেডানের তেমন গুরুত্ব ছিল না। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে ক্রিকেট আলাদা জায়গা করে নিলেও বাফুফের নির্বাচন ঘিরে অন্যরকম উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়। অ্যাডহক কমিটির সময় ফেডারেশনের সভাপতি হতেন সরকার মনোনীত। সাধারণ সম্পাদক ও যুগ্মসম্পাদক ঘিরেই আগ্রহ থাকত ক্রীড়ামোদীদের। মোহামেডান বা আবাহনীর কর্মকর্তারাই মূলত এ চেয়ারে বসতেন। বাফুফের কমিটিতে আবাহনী না মোহামেডানের কর্মকর্তা বেশি- এ নিয়ে চলত নানা তর্কবিতর্ক। সত্যি বলতে কি, দুই দলের হস্তক্ষেপ ছাড়া ফুটবলে কমিটি হয়েছে এমন নজির খুঁজে পাওয়া যাবে না। এখন তো সাধারণ সম্পাদকের পদটি বেতনভুক। নির্বাচনে তাই প্রধান আগ্রহ থাকে সভাপতি পদ নিয়ে।
ফুটবল ফেডারেশনে সভাপতি পদে এ নিয়ে তৃতীয়বার নির্বাচন হচ্ছে। আগের দুবার সভাপতি হিসেবে মোহামেডান ও আবাহনীর কর্মকর্তাদের দেখা যায়নি। এস এ সুলতান ছিলেন আরামবাগের সংগঠক। কাজী সালাউদ্দিন আবাহনীতে খেলে তারকা খ্যাতি পেলেও কখনো কর্মকর্তা বা পরিচালক ছিলেন না। এবার তাবিথ আউয়ালই নতুন সভাপতি হতে যাচ্ছেন। তিনিও কখনো দুই দলের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। এবার সিনিয়র সহসভাপতি পদেও কেউ নেই। সহসভাপতি পদে মোহামেডানের সাবেক ফুটবলার শফিকুল ইসলাম মানিক, সৈয়দ রুম্মন ওয়ালি বিন সাব্বির। সদস্য পদে আবাহনীর সাবেক খেলোয়াড় গাউস মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ফুটবল মাঠে দুই দলের অবস্থান সুখকর নয়। সাংগঠনিক শক্তিও ম্লান হতে চলেছে। নির্বাচন হবে অথচ মোহামেডান-আবাহনী প্রভাব বিস্তার করবে না তা ভাবাই যায় না। নির্বাচনে একসময় দুই দলের প্রভাব এতটাই বেশি ছিল যে, ভোটের সময় প্রার্থীরা রীতিমতো প্রতিদিনই ক্লাবে এসে তোষামোদী করতেন। এখন সেই গুরুত্বটাও নেই। এখন যত আলোচনা বসুন্ধরা কিংস ঘিরেই।