ফ্যাশন প্রতিনিয়তই পরিবর্তনশীল। আজকালের তারুণ্যের পোশাকের ডিজাইন, কাটিং, প্যাটার্নে থাকে ভিন্নতা। ফলে কেবল তরুণরা নয়, সব বয়সি ফ্যাশনপ্রেমী এমন পোশাকে ঝুঁকে থাকেন। পাশাপাশি গরমেও মেলে আরামের অনুভূতি...
কিশোর কিংবা তরুণ- এ বয়সের রয়েছে এক নিজস্ব রং। নিজের পছন্দ জানতে শুরু করার এটাই বয়স। শিশুকাল থেকে কৈশোরে পদার্পণের সময়টায় ফ্যাশন অনুভূতির সঙ্গে পরিচয় ঘটে। এ সময় মা-বাবার মতামতের সঙ্গে সঙ্গে নিজের মতামতকে প্রাধান্য দিতে শুরু করে কিশোরীরা। এ বয়সে এ ভাবনা কম নয়, বরং বেশিই। কিন্তু ঘরে? ঘর, বারান্দা বা ছাদে হাঁটাহাঁটি করার সময়ও এ বয়সের পোশাকে থাকা চাই আরাম ও ফ্যাশন। আর তাই বাড়িতে ঢিলেঢালা টপ, ফতুয়া, শার্ট, টি-শার্ট, স্কার্ট পরতে দেখা যায় কিশোরীদের।
ফ্যাশন হাউসগুলো এখনকার কিশোরীদের ফ্যাশনের সঙ্গে তাল মিলিয়েই পোশাক বানাচ্ছে। ইন্টারনেটের যুগে সব তথ্য তো ঘরে বসেই পাওয়া যাচ্ছে। ফিউশনধর্মী স্টাইলের অনেকটাই যেন সেখান থেকে বেছে নেওয়া। দেশালের অন্যতম স্বত্বাধিকারী ও ডিজাইনার ইশরাত জাহান বলেন, ‘এ বয়সি মেয়েদের পোশাক হতে হবে খুব আরামের। খেয়াল রাখতে হবে যে কাজই করুক না কেন, পোশাকটি যেন কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি না করে।’ শরৎ মাথায় রেখে তরুণী বা কিশোরীদের জন্য নানা ধরনের পোশাক বানিয়েছে কে ক্র্যাফটের ব্র্যান্ড ইয়ং কে। এর ডিজাইনার শায়লা নূর জানালেন, কিশোরীদের জন্য প্যাটার্নভিত্তিক পোশাক বেশি তৈরি হয়। এমব্রয়ডারি বা হাতের কাজ কম রেখে হালকা ফ্রিল দিয়ে বা লেইস যোগ করে একটু অন্য রকম করা হচ্ছে।
ভিন্নধর্মী মানে পশ্চিমা ঢঙের সঙ্গে দেশি ধাঁচের মিশেলে ফিউশন। এ ছাড়া নানান রকমের বোতাম, লো কাট, হাই কাট, আঙরাখা কাট দিয়েও পোশাক ভিন্ন করা হচ্ছে। আর চলতি ফ্যাশনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সাধারণ নকশাও আছে হাতা ও গলায়। শোল্ডার ড্রপ, ফিশ কাট, এলিফ্যান্ট কাট, টিউলিপ কাটসহ বিভিন্ন রকম হাতার ডিজাইন পোশাকে ভিন্ন মাত্রা যোগ করছে। এর মধ্যে কাপ্তান, রুমাল ছাঁট, পাঞ্জাবি কাট, কুর্তি কাটের ঢিলেঢালা টপও আছে। বাইরে বের হওয়ার পোশাক হিসেবে পালাজ্জোর চলটা এখন মাঝামাঝি পর্যায়ে, তবে ঘরে এখনো জনপ্রিয়। কারণ, এটা ঢিলেঢালা। এ ছাড়া রাউন্ড কাটের প্যান্ট খুব চলছে। খাটো টপের সঙ্গে টিউলিপ প্যান্ট বা ধুতি প্যান্টও পরা যায় বাসায়। কিশোরীদের পোশাক হিসেবে টি-শার্ট ও ট্রাউজার সবচেয়ে ভালো। এ সময়ের কিশোরীরা এ রকম পোশাক পরতে বেশি স্বচ্ছন্দ। আবার পাঞ্জাবির সঙ্গে টার্কিশ বা হেরেম পাজামাও পরা যায়। এ পাজামার কাট কিছুটা ভিন্ন আর ঢিলেঢালা হয়। এ বয়সের মেয়েরা যেহেতু সাধারণত একটু দৌড়ঝাঁপ করেই চলাফেরা করে, তাই এমন পোশাক তাদের জন্য আরামদায়ক হবে। এখন ‘স্ট্যান্ড অ্যালোন ড্রেস’ খুব চলছে। যে পোশাকের কাট লম্বাটে, অনেকটা গাউনের মতো। পশ্চিমা ধারার ক্রপ টপ, ব্যাগি টপের সঙ্গে হালকা এমব্রয়ডারির কাজ করা থাকে। লিনেন কাপড়ের পঞ্চো যার কাটছাঁট অনেকটা কাপ্তানের মতো। এখন লম্বা বা খাটো কটি, হাতাকাটা কটি চলছে যেগুলো হালকা ডিজাইনে তৈরি। ঘরে ওড়নার বদলে কিশোরীরা একটি কটি পরলেই স্মার্ট দেখাবে। এ ছাড়া আছে এমবোস কটন বা স্লাব কটনের ফতুয়া যার সামনের দিকে কিছুটা এমব্রয়ডারির মতো কাজ করা থাকে। এ ছাড়া লম্বা শার্ট, তিন কোনা কাটের কটি, ঝুমকা টপ, সুইস কটন কাপড়ের ফতুয়া আছে চলতি ফ্যাশনে।