ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত ফেনীর জনপদ। বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্পষ্ট হয়ে উঠছে কৃষিখাতের ক্ষতচিহ্ন। জেলার ছয় উপজেলায় বন্যায় ফসল, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। যেখানে ছয়টি উপজেলায় শুধুমাত্র ফসলের ক্ষতি হয়েছে ৫২৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকার বেশি। এতে প্রায় দুই লক্ষাধিক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, জেলার ৩৫ হাজার ৬৭৪ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা মোট ফসলি জমির ৯৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ। তার মধ্যে ১ হাজার ৮৬৫ হেক্টর আমন বীজতলা, ২৬ হাজার হেক্টর আমন, ১ হাজার ৮৫৪ হেক্টর আউশ, আবাদকৃত ৫২৫ হেক্টর শরৎকালীন সবজির পুরো অংশ, ৬৯ হেক্টর ফলবাগান, ৭ হেক্টর আদা, ১৬ হেক্টর হলুদ এবং ১৬ হেক্টর আখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ফেনী সদর উপজেলার ধর্মপুরে জান্নাত এগ্রোর খামার মালিক তোফায়েল আহমেদ রনি জানান, বন্যায় তার ৪০ হেক্টর জমিতে অন্তত ৬০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। যেখানে ৫ হাজার ড্রাগন ফল গাছ, মালটা গাছ ১৫০০, পেয়ারা গাছ ১৫০০, প্রায় ৫০০ কুল (বরই) গাছ ও ৩০০ আম গাছসহ বিভিন্ন ফুল ও ফলজ গাছ সরাসরি বন্যার পানিতে নষ্ট হয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, এত বড় ক্ষতি হওয়ার পরও সরকারিভাবে বড় ধরনের কোনো অনুদান পাইনি। এভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে সরকার না দাঁড়ালে, উদ্যোক্তা হওয়ার মনোবল হারিয়ে ফেলবে তরুণরা।
জেলার ফুলগাজী উপজেলার মুহুরী নদী তীরবর্তী কৃষক আমিন পাটোয়ারী বলেন, ৫ বিঘা জমিতে ধান লাগানোর অপেক্ষায় ছিলাম, সব বীজ নষ্ট হয়ে গেছে। নদীর বালি এসে বর্তমানে জমি অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. একরাম উদ্দিন বলেন, বন্যায় কৃষিতে বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানোর পর বেশকিছু প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বসতবাড়িতে সবজি চাষ, মাঠে হাইব্রিড জাতের সবজি, বোরো ধানসহ (উফশী জাত) ও (হাইব্রিড জাত) বর্তমানে বাস্তবায়নের শেষে বেশ কিছু প্রকল্প রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই