যখন ফুটবল বিশ্বে একের পর এক নতুন প্রতিভার আগমন ঘটছে, তখনো অটুট এক নাম—জাপানের কিংবদন্তি স্ট্রাইকার কাজুয়োশি মিউরা। ফুটবল ভক্তদের কাছে তিনি ‘কিং কাজু’ নামে পরিচিত। ৫৮ বছর বয়সে এসে ৪০তম পেশাদার মৌসুমে নেমে নতুন ইতিহাস গড়লেন এই অদম্য ফুটবলার।
জাপানের চতুর্থ বিভাগের ফুটবল লিগে অ্যাতলেতিকো সুজুকা ক্লাবের হয়ে মাঠে নেমে বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে প্রবীণ পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে নতুন রেকর্ড গড়লেন তিনি। রোববারের ম্যাচে ৮২তম মিনিটে বদলি হিসেবে মাঠে নেমে তার সংক্ষিপ্ত উপস্থিতিই দলকে ২-১ ব্যবধানে জয় এনে দিতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
নব্বই দশকে এশিয়ার অন্যতম পরিচিত ফুটবল তারকা ছিলেন মিউরা। ৫৮ বছর ১০৯ দিন বয়সে মাঠে নেমে গোল করতে না পারলেও খেলার প্রতি তার ভালোবাসা ও নিষ্ঠার অভাব ছিল না। ম্যাচ শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, "আমি দলের জয়ে অবদান রাখতে পেরে আনন্দিত। সতীর্থ ও কোচদের সহায়তায় আজও খেলতে পারছি। এখন আমার খেলাকে আরও উন্নত করতে চাই।"
গত বছর জাপানে ফিরে আসেন মিউরা। তার আগে তিনি পর্তুগালের দ্বিতীয় বিভাগের ক্লাব অলিভেইরেন্সে দুই মৌসুম কাটিয়েছেন। সেখানে ইয়োকোহামা এফসি থেকে ধারে গিয়ে ৯টি ম্যাচ খেলেন।
১৯৮৬ সালে ব্রাজিলের বিখ্যাত ক্লাব সান্তোসে পেশাদার ফুটবলে অভিষেক ঘটে তার। এরপর ইতালি, ক্রোয়েশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন ক্লাবে খেলে বিশ্ব ফুটবলকে সমৃদ্ধ করেছেন। ১৯৯৩ সালে যখন জে-লিগ চালু হয়, তখন এই ফরোয়ার্ড জাপানের ঘরোয়া ফুটবলকে জনপ্রিয় করে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
১৯৯০ সালে জাপান জাতীয় দলের জার্সিতে অভিষেক হয় তার। দেশের হয়ে ৮৯ ম্যাচে ৫৫ গোল করেন মিউরা। তবে ১৯৯৮ বিশ্বকাপে তাকে দলে না রাখার সিদ্ধান্ত ছিল দেশটির ফুটবল ইতিহাসে অন্যতম বিতর্কিত ঘটনা।
কাজুয়োশি মিউরার ফুটবল যাত্রা কেবল বয়সের রেকর্ড ভাঙার গল্প নয়; এটি তার অসাধারণ ফিটনেস, খেলার প্রতি অগাধ ভালোবাসা ও অদম্য ইচ্ছাশক্তির এক চিরন্তন উদাহরণ।
বিডি প্রতিদিন/আশিক