আজুবা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুমন আহম্মেদ খান বলেন, বাংলাদেশে স্মার্ট ইলেকট্রনিকস শিল্প দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে। স্মার্ট টিভি, স্মার্ট ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন, এয়ার কন্ডিশনারসহ গৃহস্থালি যন্ত্রপাতিতে যুক্ত হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ইন্টারনেট অব থিংস। এ পরিবর্তন শুধু মানুষের জীবনকে সহজ করছে না, শিল্প খাত এবং অর্থনীতিতেও নতুন দিগন্ত খুলে দিচ্ছে। স্মার্ট প্রযুক্তিনির্ভর এই নতুন বাস্তবতা নিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি বলেন, গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশে স্মার্ট ইলেকট্রনিকস পণ্যের বাজারে প্রায় ২৫-৩০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। শহরাঞ্চলে তো আছেই, এখন গ্রামেও মানুষ স্মার্ট টিভি বা ইনভার্টার ফ্রিজ কিনছে। প্রধান কারণ হলো ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা, অনলাইন কনটেন্টের জনপ্রিয়তা, আর তরুণ প্রজন্মের প্রযুক্তিনির্ভর জীবনধারা। আমরা দেখছি, স্মার্ট টিভির ক্ষেত্রে ইউটিউব, নেটফ্লিক্স, ফেসবুক বা গেমিং ব্যবহার বেড়েছে ব্যাপকভাবে। একইভাবে স্মার্ট ফ্রিজ বা ওয়াশিং মেশিন ঘরে কাজ কমিয়ে দিচ্ছে। অর্থাৎ প্রযুক্তি এখন বিলাসিতা নয়, দৈনন্দিন প্রয়োজন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশিরা এখন সময়ের হিসাব খুব মূল্যায়ন করছে। কর্মজীবী নারী-পুরুষ দুজনেরই ব্যস্ততা বেড়েছে। স্মার্ট ওয়াশিং মেশিন কাপড় শুকানো, ডিটারজেন্ট দেওয়া, প্রোগ্রাম সেটিং সবকিছু নিজে সামলে নেয়। স্মার্ট ফ্রিজ বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে, তাপমাত্রা নিজে নিয়ন্ত্রণ করে, খাবার নষ্ট হওয়া কমায়। স্মার্ট টিভি শুধু বিনোদন নয়, এখন শিশুদের অনলাইন ক্লাস, বাসায় বসে অফিস মিটিং এসবের বড় মাধ্যম। অর্থাৎ মানুষ সুবিধা ও আরাম চাচ্ছে, স্মার্ট ডিভাইস তা দিচ্ছে।
সুমন আহম্মেদ খান বলেন, বাংলাদেশ এখন অ্যাসেম্বলি নয়, ম্যানুফ্যাকচারিং নির্ভর দেশে পরিণত হচ্ছে। হাইটেক পার্ক, সরকারি প্রণোদনা, স্থানীয় কারিগর তৈরি এসব এ পরিবর্তনে বড় ভূমিকা রাখছে। এআই নির্ভর ডিভাইস শুধু কাজ করে না, পরামর্শও দেয়। আপনার পরিবারের ব্যবহার প্যাটার্ন দেখে ফ্রিজ শক্তি খরচ কমিয়ে দেয়। আইওটি ওয়াশিং মেশিন মোবাইলে নোটিফিকেশন পাঠায় কাপড় ধোয়া শেষ। স্মার্ট টিভি আপনার পছন্দের কনটেন্ট সাজিয়ে দেয়। আগামী পাঁচ বছরে এআই সাপোর্টেড স্মার্ট হোম বাংলাদেশের জন্য সাধারণ বাস্তবতা হয়ে যাবে। তিনি বলেন, স্মার্ট ডিভাইস ব্যবহারে তিনটি চ্যালেঞ্জ আছে; ডেটা সিকিউরিটি; স্মার্ট ডিভাইস তথ্য সংগ্রহ করে। এ তথ্য সুরক্ষিত রাখা জরুরি। অনেক মানুষ এখনো স্মার্ট ডিভাইসের ফিচারগুলো পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারে না। গ্রামাঞ্চলে এখনো সমস্যা আছে। তবে পরিস্থিতি দ্রুত উন্নত হচ্ছে। দেশের তরুণরা এখন প্রযুক্তি দিয়ে ব্যবসা করছে, কনটেন্ট তৈরি করছে, ঘরে বসে আউটসোর্সিং করছে। স্মার্ট ডিভাইস এসব কাজকে আরও সহজ করছে।
‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ শুধু একটি স্লোগান নয়, এটি প্রযুক্তিভিত্তিক নতুন অর্থনীতির ভিত্তি। আগামী ১০ বছরে বাংলাদেশ এশিয়ার অন্যতম স্মার্ট ডিভাইস উৎপাদন কেন্দ্র হয়ে উঠবে আমি নিশ্চিত।