সিংহের নতুন ধরনের গর্জন আবিষ্কার করার দাবি করেছেন একদল গবেষক। আফ্রিকার সিংহ নিয়ে গবেষণা করা বিজ্ঞানীরা এই নতুন ধরনের গর্জনের নাম দিয়েছেন ইন্টারমিডিয়েট রোর বা মধ্যবর্তী গর্জন। আগে ধারণা করা হতো, সিংহ কেবল এক ধরনের পূর্ণমাত্রার গর্জনই করে থাকে।
যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব এক্সেটারের গবেষক জনাথন গ্রোকটের নেতৃত্বে পরিচালিত এই গবেষণায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে ৩ হাজারেরও বেশি আফ্রিকান সিংহের আওয়াজ বিশ্লেষণ করা হয়। এতে দেখা যায়, পূর্ণমাত্রার গর্জনের পরেই নিয়মিতভাবে শোনা যায় অপেক্ষাকৃত ছোট, কম পিচের এই নতুন ধরনের গর্জন।
গ্রোকট জানিয়েছেন, পূর্ণমাত্রার গর্জন বিস্ফোরণের মতো উচ্চস্বরে, জটিল ও পিচের ওঠানামা থাকে। কিন্তু মধ্যবর্তী গর্জন তুলনামূলক সমতল এবং স্থির। এ আবিষ্কার প্রমাণ করে সিংহের যোগাযোগব্যবস্থা আরও জটিল।
গবেষণায় তানজানিয়ার নিয়েরেরে ন্যাশনাল পার্কে ৫০টি বিশেষ মাইক্রোফোন স্থাপন করা হয়। একই সঙ্গে জিম্বাবুয়ের বুবিয়ে ভ্যালি কনজারভেন্সিতে পাঁচটি সিংহের গলায় লাগানো হয় অ্যাকুস্টিক সেন্সর। গবেষকরা জানান, এআই মডেলটি ৯৫ শতাংশের বেশি নির্ভুলতায় বিভিন্ন গর্জন শ্রেণিবদ্ধ করতে পেরেছে।
বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, গর্জন বিশ্লেষণ করে একক সিংহকে চিহ্নিত করা সম্ভব হওয়ায় ভবিষ্যতে সিংহের সংখ্যা গণনা আরও নির্ভুল হবে। বন্যপ্রাণ সংরক্ষণে এ তথ্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বর্তমানে আফ্রিকায় মাত্র প্রায় ২৩ হাজার সিংহ অবশিষ্ট আছে।
গ্রোকট আশা প্রকাশ করেন, তথ্যভিত্তিক এ গর্জন বিশ্লেষণ পদ্ধতি ভবিষ্যতে সিংহের জনসংখ্যা নির্ধারণে নতুন দিগন্ত খুলে দেবে এবং সংরক্ষণ কার্যক্রমকে আরও কার্যকর করবে।
সূত্র: লাইভ সায়েন্স
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল