উচ্চতা মাত্র ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি। সতীর্থ এইডেন মার্করাম, মার্কো জেনসেন, কাগিসো রাবাদা, কেশব মহারাজরা সবাই তার চেয়ে দীর্ঘকায়। শারীরিক গঠনে অন্য সবার চেয়ে খর্বকায়, অথচ কীর্তিতে টেম্বা বাভুমা এখন সবাইকে ছাড়িয়ে আকাশ ছুঁয়েছে। বাভুমার নেতৃত্বে দক্ষিণ আফ্রিকা এখন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। বাভুমা ৬৪ টেস্টে ৪ সেঞ্চুরিতে রান করেছেন ৩৭০৮।
১৯৯২ সালের পর থেকে স্বপ্ন দেখিয়েও দক্ষিণ আফ্রিকা বৈশ্বিক আসরগুলোর সেমিফাইনালের হার্ডল টপকাতে পারেনি। সেই দক্ষিণ আফ্রিকা এখন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। হারতে হারতে দলটির নামের পাশে ‘চোকার্স’ শব্দটি ট্যাগ লেগে গিয়েছিল। সেই প্রোটিয়ারা এখন বিশ্বসেরা, বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। সাদা পোশাক ও লাল বলের টেস্ট ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ১৯৯৮ সালের পর বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ায় প্রোটিয়াদের নায়ক যদি হন মার্করাম, রাবাদা। তাহলে ‘মহানায়ক’ নিঃসন্দেহে টেম্বা বাভুমা। খর্বকায় এই জুলু ক্রিকেটারের হাত ধরে দক্ষিণ আফ্রিকা এখন আইসিসি টেস্ট বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। চ্যাম্পিয়ন প্রোটিয়ারা এখন অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ভারতদের মতো এলিট দল। চ্যাম্পিয়ন বাভুমা বাহিনী আর্থিক পুরস্কার জিতেছে ৩.৬ মিলিয়ন ডলার, বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৪৪ কোটি টাকা। রানার্সআপ অস্ট্রেলিয়া পেয়েছে ২.১৬ মিলিয়ন ডলার, বা প্রায় ২৬ কোটি টাকা। বাংলাদেশ সপ্তম হয়ে পেয়েছে ৭ লাখ ২০ হাজার ডলার বা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে হেরেছিল অস্ট্রেলিয়ার কাছে। সেবার পরিষ্কার ফেবারিট ছিল প্রোটিয়ারা। ২০২৪ সালে টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেও হেরে যায় ভারতের কাছে। ১৯৯২ সালে প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলে। এরপর থেকে বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের ১২টিতে সেমিফাইনাল এবং একটি ফাইনাল খেলেও শিরোপা জেতেনি। এ সময় দক্ষিণ আফ্রিকাকে নেতৃত্ব দিয়েছেন কেপলার ওয়েসেলস, হ্যান্সি ক্রোনিয়া, গ্যারি কার্স্টেন, শন পোলক, মার্ক বাউচার, জ্যাক ক্যালিস, অ্যাশওয়েল প্রিন্স, গ্রায়েম স্মিথ, হাশিম আমলা, এবিডি ভিলিয়ার্সদের মতো তারকা ক্রিকেটার। কিন্তু কোনো অধিনায়কই দলকে এক সুতোয় গেঁথে শিরোপা উৎসব উচ্ছ্বাসে মাতাতে পারেননি।
দক্ষিণ আফ্রিকা আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেয় ১২ টেস্ট খেলে। অথচ অস্ট্রেলিয়া খেলেছে ১৯ টেস্ট। এতে অনেক সমালোচকই ভ্রু কুঁচকেছেন। ফাইনাল জিতে বাভুমা বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আমরা একটা দল হিসেবেই ফাইনালে উঠেছি। আমাদের নিয়ে অনেকের সংশয় ছিল, বলা হচ্ছিল আমরা দুর্বল দলগুলোর সঙ্গে খেলেছি। আমরা খুশি যে, পারফরম্যান্স করতে পেরেছি। আশা করছি এখন সবার ধারণা পাল্টে যাবে।’