চট্টগ্রাম মহানগরী ও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ধীরে ধীরে করোনার সংক্রমণ কমে আসছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কিছুটা নিম্নমুখী অবস্থানে ফিরেছে। গত একদিনের ব্যবধানে দৈনিক শনাক্তের হার ৩ শতাংশের বেশি কমে, তা এখন ৭ শতাংশে। একইভাবে যেমনি কমছে করোনা সংক্রমণ, ঠিক তেমনি টানা চারদিনে ‘করোনায় মৃত্যুহীন’ পার হয়েছে চট্টগ্রাম। এতে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতির কারণে স্বস্তিও আসছেন স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীলদের মাঝে। তাছাড়া গত এক সপ্তাহ থেকেই সংক্রমণের হার ও দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা কমছে বলেও সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হওয়া ১৮২ জনের মধ্যে ১০৯ জনই বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। বাকি ৭৩ জন চট্টগ্রাম নগরীর বাসিন্দা। এসময় করোনায় আক্রান্ত হয়ে কোন মৃত্যুর ঘটনা নেই। তাছাড়া গত ২৪ ঘন্টাসহ করোনায় মৃত্যুহীন টানা চার দিন পার করেছে চট্টগ্রাম। তাছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ টি ল্যাবে সর্বমোট ২ হাজার ৩৩৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে এ ১৮২ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়। সংক্রমণের হার ছিল ৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এ দিন করোনায় আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি বলে জানান তিনি।
চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এক্সিকিউটিভ কমিটির (ইসি) সেক্রেটারী অধ্যাপক ডা. মুসলিম উদ্দিন সবুজ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, চট্টগ্রাম নগরী ও জেলায় টানা চারদিনে কোন মৃত্যু ঘটেনি করোনা সংক্রমণের কারণে। গত ২৪ ঘন্টায় সংক্রমণ আগের তুলনায় অনেক কমে এসেছে। চট্টগ্রামের স্বাস্থবিভাগসহ দায়িত্বশীল সকলেই করোনার সর্তকতায় কাজ করে যাচ্ছেন। সেই করোনার পর এখন ওমিক্রন নিয়েও কিছুটা টেনশনে অনেকেই। নির্দেশনা মোতাবেক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাসহ বিভিন্ন তৎপরতায় কাজও চলমান রয়েছে। তবে আমার হাসপাতালে চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি করোনা বেডও রয়েছে প্রস্তুত। অনেকেই করোনার চিমটক নিয়ে চিকিৎসা করে যাচ্ছেন। তাছাড়া হাসপাতালে এক সঙ্গে সেন্ট্রাল অক্সিজেনসহ ১৫০ জনের মতো করোনা রোগীর সেবা দেয়ার প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানান তিনি।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য অনুসারে আরো জানা গেছে, সবমিলে করোনায় এ পর্যন্ত চট্টগ্রাম নগরী ও জেলায় মোট প্রাণ হারিয়েছেন ১ হাজার ৩৬০ জন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম মহানগরীতে ৭৩৪ জন এবং চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন উপজেলায় মৃত্যু হয়েছে ৬২৬ জন। শুরু থেকে এ পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন ১ হাজার ৩৬০ জন। এ নিয়ে চট্টগ্রাম নগরীসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় মোট করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ২৫ হাজার ১ জন রয়েছে।
রবিবার করোনায় দ্বিতীয় ডোজ টিকা পাবে শিক্ষার্থীরাঃ
করোনাভাইরাসের প্রথম ডোজের টিকাদান কার্যক্রম সফলভাবে শেষ হওয়ার পর চট্টগ্রাম রবিবার থেকে শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় ডোজ টিকাদানের কার্যক্রম। প্রথম ডোজ নেওয়া ১২ থেকে ১৮ বছরের শিক্ষার্থীরা এবার দ্বিতীয় ডোজ পাবে। চট্টগ্রাম নগরীর ৬টি কেন্দ্রে সকাল ৯টা থেকে টিকা দেয়া শুরু হবে। শিক্ষার্থীদের এসময় অবশ্যই টিকা কার্ড সঙ্গে নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে উপস্থিত হতে হবে।
টিকাদানের ৬ কেন্দ্রগুলো হলো-
চট্টগ্রাম নগরীর পশ্চিম ষোলশহরের জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা, জিইসি কনভেনশন হল, এমএ আজিজ স্টেডিয়াম, নেভাল এভিনিউয়ের অফিসার্স ক্লাব, (চট্টেশ্বরী রোডের চিটাগাং গ্রামার স্কুল এবং সিআরবি রোডের বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় আঞ্চলিক কেন্দ্রে।
বিডি প্রতিদিন/এএম