চলতি মাসে টানা তাপপ্রবাহের কবলে উত্তরের জনপদ। তপ্ত রোদে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে প্রাণীকূল ও প্রকৃতি-পরিবেশ। প্রতিদিন সকাল থেকে তীব্র রোদ ও ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। জুনের শুরু থেকে তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ ডিগ্রির ঘরে ওঠানামা করছে। এদিকে ভ্যাপসা গরমে সকল শ্রেণিপেশার মানুষের অসহনীয় কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। গরম থেকে বাঁচতে শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক মানুষেরা নদী ও পুকুরে নেমে জলকেলিতে মেতেছেন।
বার বার গোসল করে শরীর ঠান্ডা করছেন। অনেকেই আবার ছায়াযুক্ত জায়গায় বসে বিশ্রাম নিচ্ছেন। প্রখর রোদের মধ্যে প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে আসছে না। তপ্ত রোদের কারণে ভ্যান ও রিকশাচালকরা যাত্রী না পেয়ে অলস সময় পার করছেন।
জানা গেছে, বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠের পর শুরু হয়েছে আষাঢ় মাস। তবে বর্ষার মৌসুম আষাঢ় মাস হলেও বৃষ্টির দেখা নেই। বেলা বাড়ার সাথে সাথে রোদের তীব্রতা যেন চুলার আগুনের মত গায়ে বিধছে। বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে গায়ে ফোসকা পড়ার মত অবস্থা হচ্ছে। রাস্তা-ঘাট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে রোদের তীব্রতায়। এই আবহাওযায় সবচেয়ে বেশি অস্বস্তিতে আছেন শ্রমজীবী মানুষ, নির্মাণ শ্রমিক, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, কৃষক, শিশু ও বৃদ্ধরা। সূর্যের তাপ যেন তাদের ঘাড়ে চেপে বসেছে। দিনের বেলায় বাইরে বের হওয়া মানেই তাপদাহের সঙ্গে যুদ্ধ। এর ফলে স্বাস্থ্যখাতেও চাপ বাড়ছে। হিট স্ট্রোক, পানিশূন্যতা, ডায়রিয়া, জ্বর ও চর্মরোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এই সময়ে পর্যাপ্ত পানি পান, হালকা খাবার খাওয়া এবং সরাসরি রোদে বের না হওয়াই ভালো। তবে জীবিকার তাগিদে তীব্র রোদেও কাজ করতে হচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষদের। শিশুসহ বয়স্করাও একটু ঠান্ডা পেতে পুকুরে বা নদীতে নেমে পড়ছেন। কেউবা পান করছেন ঠান্ডা পানি বা শরবত। সোমবার (১৬ জুন) সকালে বগুড়ার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথে সূর্যের উপস্থিতি মানুষের সকালের ঘুম হারাম করে দিচ্ছে। সেই সাথে বাতাসে জলীয় বাস্পের ব্যাপক উপস্থিতির জন্য শরীর থেকে দর দর করে ঘাম ঝরার কারণে অস্বস্তি বেড়ে গেছে।
বগুড়া শহরের কলোনী এলাকার একটি এপার্টমেন্টের বাসিন্দা মো. বিপ্লব মিয়া জানান, তার ফ্লাটটি টপ ফ্লোরে অবস্থিত। সারাদিন বাড়িতে টিকতে পারছি না। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিছানা, মেঝে, এমনকি আসবাবপত্রগুলোও গরম থাকছে। দিনের বেলা বিছানায় শুয়ে থাকা যাচ্ছে না। রাতেও স্বস্তি মিলছে না।
পুকুরে গোসল করতে আসা কৃষক ফরিদুল ইসলাম জানান, সকাল থেকে রোদের মধ্যে জমিতে কাজ করছি। রোদের তাপ এতটাই বেশি কাজ করতে না পেরে পুকুরে গোসল করছি। তারপরেও শরীরে তাপ কমছে না।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল