রাজধানীর ডেমরায় অটোরিকশাচালকের সঙ্গে পুলিশের ভাড়া নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার জেরে এলাকাবাসীর ওপর অতর্কিত হামলার অভিযোগ উঠেছে ডেমরা পুলিশ লাইনসের সদস্যদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার বিকালে রাজাখালী এলাকায় লাঠিসোঁটা, রড ও পাইপ হাতে শতাধিক পুলিশ সদস্য সিভিলবেশে এসে হামলা চালান বলে জানান ভুক্তভোগীরা। এলাকাবাসীর দাবি, হামলায় অন্তত ২০ জনকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। পুলিশ সদস্যরা ৮ থেকে ১০টি দোকান ভাঙচুর করেন। প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা সিনেমা স্টাইলে তাণ্ডব চালানোর পর তারা ব্যারাকে ফিরে যান।
হামলায় জড়িত ডেমরা পুলিশলাইনসের সদস্যদের শনাক্ত করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থাসহ চাকরিচ্যুত করা হবে বলে জানিয়েছেন ডেমরা পুলিশ লাইনসের ইনচার্জ ও পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টের (পিওএম-পূর্ব) উপকমিশনার (ডিসি) কাজী নুসরাত এদিব লুনা। বৃহস্পতিবার রাতে লাঠিসোঁটা, এসএস পাইপ ও লোহার রড দিয়ে হামলার পর এলাকাবাসীর সঙ্গে বৈঠক শেষে ভুক্তভোগীদের আশ্বস্ত করে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় ওয়ারী বিভাগের এডিসি মো. আকরামুল হাসান, ডেমরা থানার ওসি মো. মাহমুদুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। তবে অতর্কিত হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করার দাবি জানিয়েছেন আহতরা।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকালে ডেমরা পুলিশ লাইনসের সামনে বালু নদের পাড় থেকে অটোরিকশায় স্টাফ কোয়ার্টার যাওয়ার জন্য ৫০ টাকা ভাড়া ঠিক করেন এক পুলিশ সদস্য। এ সময় আরেক পুলিশ সদস্য এসে পড়ায় ১০ টাকা ভাড়া বেশি চান ওই অটোরিকশাচালক। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই দুই পুলিশ সদস্য চালককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করায় উত্তেজিত হন চালক। বাগ্বিতন্ডার এক পর্যায়ে পাশের অটোরিকশাচালক আমজাদ এগিয়ে আসেন।
কিন্তু অটোরিকশার দুই চালকের সঙ্গেই বাগ্বিতন্ডা ও হাতাহাতি হয় পুলিশের দুই সদস্যের। এ ঘটনা কেন্দ্র করে পরে পুলিশলাইনসের সদস্যরা সিভিল ড্রেসে এসে অটোরিকশাচালক ও এলাকাবাসীর ওপর অতর্কিত হামলা চালান।
ডেমরা থানার ওসি মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘হামলার বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক ও হৃদয়বিদারক। আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাবাসীকে বুঝিয়ে শান্ত করতে পেরেছি, এটিই আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া। যারা হামলার ঘটনায় জড়িত, ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।’
পিওএম-পূর্বের ডিসি কাজী নুসরাত এদিব লুনা বলেন, ‘পুলিশ ও এলাকাবাসীর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি কেন্দ্র করে হামলা ঘটে। আমরা এলাকাবাসীর কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। ইতোমধ্যে জড়িতদের শনাক্তের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। উসকানিদাতা ও জড়িতদের শনাক্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’