দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় লালমনিরহাট জেলার বেশির ভাগ সড়কে পিচ-পাথর উঠে গেছে। বেরিয়ে পড়েছে খোয়া-মাটি। অনেক স্থানেই সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। প্রায় দিনই দুর্ঘটনা ঘটছে। দুর্ভোগ হচ্ছে জেলাবাসীর। জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার দৈখাওয়া মোড় থেকে জেলা শহর পর্যন্ত প্রায় ৫৫ কিলোমিটার সড়কজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য গর্ত। উঠে গেছে কার্পেটিং। হেলেদুলে চলে যানবাহন। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন কালিগঞ্জ উপজেলাসহ আশপাশের এলাকার হাজারো মানুষ জেলা শহরে যাতায়াত করে। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক বক্কার মিয়া আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। রোগী নিয়ে এ সড়ক দিয়ে গেলে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। প্রায় দিনই এ সড়কে গাড়ি উল্টে যায়, ঘটে দুর্ঘটনা।’
একই সড়কের ভেলাবাড়ি এলাকার বাসিন্দা শিক্ষক রিপন ইসলাম বলেন, ‘চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে সড়কটি। জেলা শহরে যেতে এমন বেহাল সড়ক কখনোই আশা করা যায় না। সড়কটির গর্ত, ভাঙা স্থানগুলো দ্রুত মেরামত করা না হলে দুর্ঘটনায় প্রাণহানিও হতে পারে। বর্ষায় দুর্ভোগ আরও বেড়ে যাবে।’
আদিতমারী উপজেলার নামুড়ি-কালিগঞ্জের শিয়াল খোওয়া সড়কটিও বেহাল। এ সড়কের প্রায় ৪ কিলোমিটার অংশে অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। গোড়লের এলাকার বাসিন্দা শিক্ষক মনিরুজ্জামান সরকার বলেন, ‘সড়ক মেরামতের টাকা নেই, নাগরিকদের কী সেবা দেবে। ট্যাক্স নেওয়া ছাড়া আর কোনো কাজ নেই।’ এই সড়কে প্রতিদিনই অটো উল্টে ঘটছে দুর্ঘটনা। অটো কিংবা মোটরসাইকেল কোনোটাই ঠিকমতো চালানো যায় না, বললেন নামুড়ির বাসিন্দা হামিদুল ইসলাম। একই অবস্থা কুমড়িরহাট-কালিস্থান ৫ কিলোমিটার সড়কেরও। এ সড়কে ডোবার মতো শতাধিক গর্ত রয়েছে। গ্রীষ্মকালে ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল করলেও বর্ষায় চলা দায় হয়ে যায়। স্থানীয় আমিনুল ইসলাম ভাঙা সড়ক দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘বর্ষাকালে পানি জমে থাকায় গর্ত বোঝা যায় না। একেকটা গর্ত ১২ থেকে ১৫ ফুট দীর্ঘ। এলাকাবাসী কয়েকবার সড়কটি মেরামতের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে গিয়েছিল; কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।’ সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) লালমনিরহাট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান লাডলা বলেন, ‘রুটিন মেরামতের আওতায় সড়কগুলো দ্রুত সংস্কার করতে হবে।’
লালমনিরহাট এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী কাওছার জামান বলেন, ‘চলতি অর্থবছরে কোনো বরাদ্দ না থাকায় সড়ক সংস্কারসহ উন্নয়ন কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। নতুন অর্থবছরে বরাদ্দ পেলে সড়কগুলো সংস্কার করা হবে। একই কথা বলেন, লালমনিরহাট সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল মোমেনও।