শুধুমাত্র ১লা বৈশাখকে পুঁজি করেই নেত্রকোনার মৃৎ শিল্পীরা ধরে রেখেছেন তাদের ঐতিহ্য। মাটির তৈরি নানা ধরনের জিনিস বানানোই তাদের আদি পেশা। এছাড়া সারা বছর তাদের অন্যান্য কাজ করে জীবিকা চলে। বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন নেত্রকোনার মৃৎ শিল্পীরা। পূর্ব পুরুষদের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতেই প্রতিবছর এই সময়ে মাটি দিয়ে নানা পণ্য তৈরিতে ব্যস্ত থাকেন কুমার ও পাল পরিবারের সদস্যরা।
বাঙালির ঐতিহ্য পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ ১৪২৬ কে বরণে নেত্রকোনায় চলছে নানা প্রস্তুতি। তার মধ্যে মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ মেলার আয়োজনেও ব্যস্ত সংশ্লিষ্টরা। আর এই উৎসবকে ঘিরেই নেত্রকোনা সদর উপজেলার রৌহা ইউনিয়নের বেশকটি গ্রামে কুমার এবং পাল বাড়িগুলোতে মাটি দিয়ে তৈরি হচ্ছে নানা খেলনা সামগ্রী। বৈশাখকে কেন্দ্র করে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বসবে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ মেলা। আর এই মেলার আনন্দে অংশ নিতেই ছোটদের জন্য তৈরি করছেন ঢংকা, হাড়ি পাতিল, গরু, ঘোড়া, পুতুল পালকি, হাতিসহ বিভিন্ন খেলনা সামগ্রী। সেইসাথে তৈরি হচ্ছে বাড়িতে সাজিয়ে রাখার মাটির ফুলদানিও। ছোটবড় নানা বয়সী মৃৎ শিল্পীদের হাতে তৈরি খেলনা আগুনে পুড়িয়ে এখন চলছে রং তুলির আচর। নানা রঙে রাঙ্গিয়ে তোলার কাজ।
মূলত পূর্ব পুরুষদের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতেই প্রতিবছর এই সময় ব্যস্ত থাকেন তারা। যা থেকে বাৎসরিক আয় হয় তাদের। পরে এখান থেকে কেউ কৃষি কেউবা দোকনের কাজ করেন বলে জানান শিল্পীরা।
এদিকে, বৈশাখী উৎসবের আয়োজনে ব্যস্ত জেলা প্রশাসন ছাড়াও শহরের বিভিন্ন সংগঠন। বিশেষ করে মধুমাছি কঁচিকাঁচার মেলার আয়োজনে মঙ্গল শুভাযাত্রায় বাঙালির ঐতিহ্য ফুটিয়ে তুলতে বিভিন্ন বর্ণের প্লেকার্ড,ব্যানার ফেস্টুন বানানোর প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন হওয়ার পথে। প্রতিদিন এই কাজে অন্যদের সঙ্গে অংশ নিচ্ছেন তরুণ-তরুণীরাও।
জেলা প্রশাসক মো. মঈনউল ইসলাম জানান, জেলা প্রশাসনের আয়োজনে নতুন বছরকে বরণে মঙ্গল শোভাযাত্রা, ঐতিহ্যবাহী কাবাডি খেলাসহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় জেলা পুলিশ প্রশাসন থেকেও নেয়া হয়েছে কয়েক স্থরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সেইসাথে নিরাপত্তার সার্থে সন্ধ্যার মধ্যেই সকল কর্মসূচি সমাপ্তি করারও আহ্বান জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম