ঝালকাঠির সদর উপজেলার শেখেরহাট ইউনিয়নের গুয়াটন গ্রামে তালগাছ কেটে শত শত বাবুই পাখির বাসা ধ্বংস এবং ডিম ও ছানা নিধনের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার প্রধান আসামি মো. মোবারক ফকির (৬৫) গ্রেপ্তার হয়েছেন।
রবিবার (৩০ জুন) সন্ধ্যায় পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ থানা এলাকা থেকে মোবারক ফকিরকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ঘটনার সূত্রপাত গত ২৭ জুন (শুক্রবার) সকালে। ওই দিন পূর্ব গুয়াটন এলাকায় সরকারি রাস্তার পাশে একটি বড় তালগাছ কেটে ফেলা হয়, যেটি ছিল সরকারি জমিতে অবস্থিত। গাছটির শাখা-প্রশাখায় বাবুই পাখির অন্তত ৪৭টি বাসা ছিল, যাতে ডিম ও ছানাসহ অন্তত ৯৬টি ছানা এবং ২৪টি ডিম ছিল।
স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিরা গাছে পাখির বাসা থাকার কথা জানিয়ে গাছটি না কাটার অনুরোধ জানালেও 'দুষ্কৃতিকারী' তা অগ্রাহ্য করে গাছটি কেটে ফেলে। ফলে গাছের সঙ্গে থাকা বাসাগুলো নিচে পড়ে পানিতে ডুবে যায় এবং প্রায় সব ছানা মারা যায়, ডিমগুলোও নষ্ট হয়। কিছু প্রাপ্তবয়স্ক বাবুই পাখি উড়ে গেলেও অধিকাংশ পাখিই ধ্বংসপ্রাপ্ত বাসার কারণে আর টিকে থাকতে পারেনি।
এ ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার পর শেখেরহাট ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মাসুদুর রহমান বাদী হয়ে রাজাপুর থানায় তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন। অন্যদিকে বন বিভাগও বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ অনুযায়ী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ঝালকাঠিতে একটি মামলা দায়ের করে।
ঝালকাঠির পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায় জানান, “বাবুই পাখির ছানা ও ডিম ধ্বংসের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”
এ বিষয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ বলেন, “বন্যপ্রাণী হত্যা ও তাদের আবাসস্থল ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
পরিবেশ রক্ষার অংশ হিসেবে ঘটনাস্থলে বন বিভাগ নতুন তালগাছের চারা রোপণ করেছে এবং স্থানীয় পর্যায়ে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও সচেতনতা কার্যক্রম শুরু করেছে।
বিডি প্রতিদিন/আশিক