ঢাকার বাজারে ডিম ও পিঁয়াজের দাম একেবারেই লাগামহীনভাবে বেড়ে চলেছে। গত দুই সপ্তাহে ডিমের দাম ১২০ থেকে লাফিয়ে ডজন ১৫০ টাকায় পৌঁছেছে। একই সঙ্গে পিঁয়াজের দামও চড়া হয়েছে। অনেক এলাকায় এখন ৮০-৯০ টাকা কেজিতে পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডিম ও পিঁয়াজের এই হঠাৎ মূল্যবৃদ্ধির পেছনে সরবরাহ কম এবং চাহিদা বেড়ে যাওয়াই মূল কারণ। ডিমের ক্ষেত্রে বর্ষার মৌসুমে কিছু খামার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উৎপাদন কমেছে। পিঁয়াজের ক্ষেত্রেও বৃষ্টির কারণে অভ্যন্তরীণ সরবরাহের ঘাটতিকে দুষছেন ব্যবসায়ীরা। এই দুই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সম্প্রতি কমার কোনো আশা দেখছেন না বলেও জানিয়েছেন তারা।
গতকাল রাজধানীর মালিবাগ, শান্তিনগর ও কাওরানবাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাইকারি বাজারে ডিম ও পিঁয়াজের সরবরাহ সীমিত। প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪৫-১৫০ টাকায়। এর মধ্যে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে সাদা ডিম আর ১৫০ টাকা বাদামি রঙের ডিম। এ ছাড়া হাঁসের ডিম ডজন ২২০, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে মানভেদে পিঁয়াজ ৮০-৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা দুই সপ্তাহ আগেও ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। পাড়ার দোকানে পিঁয়াজ ৯০-৯৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সবজি ও মাছের দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেক ক্রেতা ডিমে বেশি ঝুঁকছেন। আর পিঁয়াজের চড়া দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।
বাংলাদেশ এগ প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তাহের আহমদ সিদ্দিকী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ডিমের উৎপাদন কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে। অনেক খামার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মুরগি ও ডিমের উৎপাদনই সীমিত হয়ে গেছে। তা ছাড়া উৎপাদন ব্যয়ও বেড়ে যাওয়ায় খামারিরা ডিমের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। আগামী এক সপ্তাহে ডিমের দাম কমার কোনো আশা নেই বলেও জানান তিনি।
এদিকে পিঁয়াজ ব্যবসায়ীরা জানান, বৃষ্টিতে কৃষকের কাছে মজুত থাকা পিঁয়াজ অধিকাংশই নষ্ট হয়ে গেছে। তাই পিঁয়াজের সরবরাহ কমেছে। অভ্যন্তরীণ পরিবহন খরচ বাড়ার কারণে দামও স্থিতিশীল হচ্ছে না। তাই পিঁয়াজের দাম একটু বেশি। কাওরান বাজারের পিঁয়াজ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পিঁয়াজের সরবরাহ আগের চেয়ে কম। বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কৃষকরা বেশি দামে পিঁয়াজ বিক্রি করছেন। পরিবহনসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। রাজধানীর ইস্কাটনের দিলু রোড এলাকার মুদি দোকানদার কাওসার আহমেদ বলেন, বাজার থেকে পাইকারিতে পিঁয়াজ কিনে আনতে হচ্ছে ৭৫-৮০ টাকা কেজিতে। পরিবহন ও শ্রমিক খরচ সব মিলিয়ে ৯০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। তাছাড়া উপায় নেই।