জাতিসংঘ সমর্থিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্য থেকে ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিতাড়নের পর তাদের গ্রাম ও মসজিদ পুড়িয়ে দিয়ে জমি দখল করে সামরিক ঘাঁটি তৈরি করেছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সেনারা শুধু বসতি নয়, রোহিঙ্গাদের কবরস্থান ও কৃষিজমিও ধ্বংস করেছে এবং নথিভুক্ত ভূমি রেকর্ড থাকা সত্ত্বেও তা দখল করেছে।
প্রতিবেদনটি ইনডিপেনডেন্ট ইনভেস্টিগেটিভ মেকানিজম ফর মিয়ানমার (আইআইএমএম) দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। এটি প্রত্যক্ষদর্শীর জবানবন্দি, স্যাটেলাইট চিত্র, ভিডিও ফুটেজ ও সরকারি নথির ভিত্তিতে প্রস্তুত করা হয়েছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনী এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি গ্রাম গুঁড়িয়ে দিয়ে সেনা অবকাঠামো নির্মাণে সরাসরি অংশ নেয়। উদাহরণ হিসেবে ইন দিন গ্রাম উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে ২০১৮ সালে রয়টার্স ১০ রোহিঙ্গা পুরুষের হত্যার ঘটনা প্রকাশ করেছিল। সেখানে ধ্বংসস্তূপের ওপর নতুন সামরিক ঘাঁটি তৈরি করা হয়, যার মধ্যে স্থায়ী ভবন, রাস্তা, সুরক্ষিত প্রাচীর ও দুটি হেলিপ্যাড রয়েছে।
জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা হবে। বৈঠকে বাংলাদেশে শরণার্থী শিবিরের করুণ পরিস্থিতি ও স্থগিত হওয়া প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া গুরুত্ব পাবে।
তবে মিয়ানমার বর্তমানে অস্থিতিশীল। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির সেনা অভ্যুত্থানের পর দেশটিতে গৃহযুদ্ধ চলছে। রাখাইন রাজ্যে আবারও সহিংসতা শুরু হয়েছে, এবং কিছু রোহিঙ্গা অস্ত্র হাতে নিতে বাধ্য হচ্ছে।
আইআইএমএম প্রধান নিকোলাস কুমজিয়ান জানিয়েছেন, তহবিল সংকটের কারণে প্রমাণ সংগ্রহ কার্যক্রম বছরের শেষ নাগাদ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, “নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের শর্ত তৈরি হলেই রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরানো সম্ভব।”
সূত্র: রয়টার্স
বিডি প্রতিদিন/আশিক