ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে করা পৃথক তিন মামলায় পঞ্চম দিনে ৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ করেছেন আদালত। এ নিয়ে তিন মামলায় আদালত মোট ২৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন করলেন। গতকাল ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুনের আদালতে সাক্ষীরা তাদের জবানবন্দি দেন। তবে আসামিদের পক্ষে আইনজীবী না থাকায় তাদের জেরা হয়নি। এদিন সাক্ষীদের সাক্ষ্যে উঠে আসে শেখ হাসিনার স্বামী মরহুম ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া থেকে পাওয়া সুধা সদনের সম্পত্তির তথ্য। স্বামীর মৃত্যুর পর ধানমন্ডির সুধা সদনের বসতবাড়ির সম্পত্তি থেকে নিজ অংশ বুঝে নেন শেখ হাসিনা। পরে সেই সম্পত্তি দুই সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে হেবা (দান) করেন তিনি। ঢাকা শহরে তাদের এসব সম্পত্তি থাকা সত্ত্বেও নিজেদের নামে কোনো সম্পত্তি নেই উল্লেখ করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে রাজউক থেকে প্লট বরাদ্দ নেন শেখ হাসিনা ও পরিবারের সদস্যরা।
গতকালের সাক্ষীরা হলেন- প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মোটর ক্লিনার মোহাম্মদ উজ্জ্বল হোসেন, গাজীপুরের কালীগঞ্জের সাব-রেজিস্ট্রার জাহিদুর রহমান, সদর রেকর্ডরুমের সাব-রেজিস্ট্রার মাহবুবুর রহমান, ঢাকার মেট্রোপলিটনের সাবেক ম্যাজিস্ট্রেট এম মেজবাহউর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের উচ্চমান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক তৈয়বা রহিম, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মুদ্রাক্ষরিক কামরুন্নাহার, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম ও কম্পিউটার অপারেটর মুক্তি তরফদার এবং ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহ। তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ১৫ অক্টোবর পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য করেন আদালত। এসব মামলার একটিতে শেখ হাসিনাসহ ১২ জন, আরেকটিতে জয় ও শেখ হাসিনাসহ ১৭ জন এবং অপর মামলায় পুতুল ও শেখ হাসিনাসহ ১৮ জন আসামি। প্লট বরাদ্দের দুর্নীতির অভিযোগে গত জানুয়ারিতে পৃথক ছয়টি মামলা করে দুদক। মামলায় শেখ হাসিনা, ছেলে জয়, মেয়ে পুতুল, বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে ও যুক্তরাজ্যের এমপি টিউলিপ সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক এবং অপর মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকসহ আরও অনেককে আসামি করা হয়। মামলার অভিযোগে বলা হয়, সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকাকালে শেখ হাসিনা ও তার পরিবার ক্ষমতার অপব্যবহার করেন।