নড়াইলের কালিয়ায় মোবাইল চোর সন্দেহে ইকরামুল কাজী (২২) নামের এক যুবককে গাছের সঙ্গে বেঁধে দিনভর পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। পরে ঘটনা ধামাচাপা দিতে মরদেহ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে বিষয়টিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রবিবার (১৭ নভেম্বর) রাতে উপজেলার পুরুলিয়া ইউনিয়নের চাঁচুড়ী বাজার সংলগ্ন পূর্ব পুরুলিয়া গ্রাম থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (১৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত ইকরামুল কাজী পুরুলিয়া গ্রামের ময়নুল কাজীর ছেলে। পেশায় তিনি রাজমিস্ত্রি ছিলেন।
নিহতের মা লাকি বেগম অভিযোগ করে বলেন, রবিবার সকালের দিকে প্রতিবেশী পিটুল মোল্যা তাদের বাড়ির বারান্দার মধ্যে এসে মোবাইল চুরির অভিযোগে পিটুলের ছেলে শিফায়েত মোল্যা, রাব্বী, হামিদুল, সহিদুল ও রানী বেগমসহ ২০-২৫ জন স্থানীয় লোকজন তাঁকে আটক করেন। এরপর বাড়ি থেকে ধরে পিটুলের বাড়িতে নিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে ইকরামুল কাজীকে দিনভর পিটুনি দেওয়া হয়।
গণপিটুনি ঠেকাতে তিনি (লাকি বেগম) নির্যাতনকারীদের দুই হাজার টাকাও প্রদান করেন। এরপরই হঠাৎই সেখান থেকে সে নিখোঁজ হয়। স্থানীয় চিকিৎসা কেন্দ্রসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজির পর হতাশ হয়ে সন্ধ্যারদিকে বাড়ি ফিরে ফ্যানের রিংয়ের সঙ্গে ইকরামুল কাজীর মরদেহ ঝুলতে দেখেন লাকি বেগম। পিটুল মোল্যা তার লোকজন নিয়ে এক জোট হয়ে তাকে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে মরদেহ তাদের অগোচরে শোবার ঘরের মধ্যে ঝুলিয়ে রেখে গেছে বলে লাকি বেগমের অভিযোগ। তিনি এ ঘটনার বিচার চান।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
ইকরামুল কাজী মারা যাওয়ার পর থেকে পিটুল মোল্যার বাড়ির সবাই আত্মগোপনে। অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সঙ্গে জড়িত পিটুল মোল্যা মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তার বিরুদ্ধে কালিয়া থানায় মাদক মামলা আছে। এ অপরাধের জন্য তিনি একাধিকবার কারাভোগও করেছেন।
কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘নিহতের স্বজনরা অভিযোগ করেছেন তাকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তবে অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।’
বিডি প্রতিদিন/নাজিম